শরীরের বিভিন্ন স্থান কেঁপে ওঠা কোনো ক্যানসারের লক্ষণ নয় তো? জানুন বিস্তারিত

ক্যানসার কঠিন এক ব্যাধি। এ কারণে ক্যানসারের নাম শুনলেই সবাই ঘাবড়ে যান। এটি এমন একটি রোগ যাতে শরীরের কিছু কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে যায় ও বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের লক্ষণেও ভিন্নতা আছে।

কখনো কখনো একটি ক্যানসারজনিত টিউমার ম্যালিগন্যান্ট হয়। এর অর্থ হলো, এটি বাড়তে পারে ও শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে পেশিতে ঘা, কাঁপুনি বা ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়।

অনেকেই বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নেন। তবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাঁপুনি বা খিচুনির সৃষ্টি হলে সতর্ক হতে হবে এখন থেকেই।

পেশি কেঁপে ওঠা কোন ক্যানসারের লক্ষণ?

এমন সমস্যা তখনই দেখা যায়, যখন টিউমারটি মস্তিষ্কে চাপ দিতে শুরু করে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের অংশে স্বাভাবিক কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

মস্তিষ্কের টিউমার মস্তিষ্কের নিউরনকে উত্তেজিত করে, ফলে পেশি সংকোচন, মোচড়ানো, অসাড়তা, ঝাঁকুনিরি সৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি শ্বাস ও চেতনা কমে যেতে পারে।

টেম্পোরাল লোব, ফ্রন্টাল লোব ও প্যারিটাল লোবে ছড়িয়ে পড়া টিউমারগুলো বক্তৃতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমস্যা সমাধান, একাগ্রতা ও চিন্তার গতির ফাংশনে সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই এমন লক্ষণ দেখলিই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

এমনকি স্পাইনাল কর্ড টিউমার বা ক্যানসারে আক্রান্ত হলে পেশিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- পা, গোড়ালি ও পায়ের পেশির টিস্যু শক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মেরুদণ্ডের বেশিরভাগ প্রাথমিক টিউমারই সৌম্য ও ধীরে ধীরে বড় হয়। অন্যদিকে সেকেন্ডারি টিউমার ক্যানসার কোষ যা শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে আসে।

কিছু প্রধান ক্যানসার যা মেরুদণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে তার মধ্যে আছে প্রোস্টেট, ফুসফুস ও স্তন ক্যানসার। মেটাস্টেসাইজ করার উচ্চ ক্ষমতার কারণে, এসব ক্যানসারসহজেই মেরুদণ্ডের ভিতরের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

দু’ধরনের ব্লাড ক্যানসার যেমন- মায়লোমা ও লিউকেমিয়া মেরুদণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে বলেও জানা গেছে। এটি সাধারণত ঘটে যখন অস্থি মজ্জার অভ্যন্তরে শ্বেত কোষ বা রক্তরস কোষে ম্যালিগন্যান্সির উৎপত্তি হয়।

যখন ক্যানসার মেরুদণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে তখন রোগীরা চেতনা বা শরীরের স্বর হারাতে পারেন। এরপরে পেশি কেঁপে ওঠা, মোচড়ানো বা শিথিল হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।

এর পাশাপাশি পিঠে ব্যথা অনুভব করতে পারে রোগী। যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও খারাপ হয়, প্রায়শই মাঝখানে বা নীচের পিঠে থাকে এমন ব্যথা, যা সময় যেতেই তীব্র হয়। এমনকি এ ধরনের ব্যথা ওষুধ দ্বারাও উপশম হয় না।

শুয়ে থাকার সময়ও এমন ব্যথা আরও খারাপ হয় ও নিতম্ব বা পায়ে প্রসারিত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা পায়ের পেশিতে দুর্বলতা ও অসাড়তা অনুভব করেন। এ কারণে পরে হাঁটা কঠিন হয়ে পড়ে।

অনেকে পঙ্গু পর্যন্ত হয়ে যেতে পারেন। তাই শারীরিক এসব লক্ষণ মোটেও অবহেলা করবেন না। যে কোনো সমস্যা দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

News Desk

Recent Posts

সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের ট্রিকস

সবার ঘরেই অন্তত একটি করে হলেও সিলিং ফ্যান আছে। এই গরমে যাদের ঘরে এসি বা এয়ার কন্ডিশন নেই, তাদের ভরসা…

5 hours ago

প্রতিদিন ১০ মিনিট হাসলে শরীরে যা ঘটে

বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। তবে হাসিখুশি থাকা যে শরীর ও মনের জন্য কতটা উপকারী, তা হয়তো অনেকেরই…

6 hours ago

গরমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়লে দ্রুত যা করবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এই তাপপ্রবাহে ডায়রিয়ার সমস্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেকের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়েছে। যারা এরই…

8 hours ago

এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে কী কী খাওয়াবেন?

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি হাঁসফাঁস করছে ছোটরাও। এ সময় শিশুদের কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাই এখন বড় প্রশ্ন, প্রত্যেক মা-বাবার জন্য়।…

9 hours ago

ত্বকে হিট র‌্যাশ উঠলে সারাতে কী করবেন?

তাপপ্রবাহে সবার মধ্যেই অস্বস্তি বেড়েছে। গরমে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ত্বকেও দেখা দেয় ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ট্যানসহ নানা সমস্যা। তার মধ্যে…

9 hours ago

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা যে কারণে বিপজ্জনক

কাজের ব্যস্ততা কিংবা আলস্যের কারণে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস হতে পারে বিপজ্জনক। এই অভ্যাসের কারণেই…

10 hours ago