আপনার কি কিডনির সমস্যা রয়েছে? জেনেনিন কোন খাবার কী পরিমানে খাওয়া উচিত

মানবদেহের জটিল রোগগুলোর মধ্যে কিডনি রোগ অন্যতম। কিডনির রোগ হলে রসনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সারাজীবন সতর্কতার সঙ্গে খাবার খেতে হয়।

দীর্ঘ মেয়াদি কিডনি রোগের চিকিৎসায় একমাত্র উপায় হলো সঠিক পথ্য। রক্তে ইলেকট্রোলাইটসের পরিমাণ, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, ইউরিয়া ও ইউরিক এসিডের পরিমাণ, রক্ত ও ইউরিনে এলবুমিনের পরিমাণ এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ভেদে পথ্যকে সাজাতে হয়।

কিডনি রোগী কোন খাবার কী পরিমাণ খাবেন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক ডা. আলমগীর মতি।

কার্বোহাইড্রেট : কিডনি রোগী মোট ক্যালোরি চাহিদার বেশির ভাগই কার্বোহাইড্রেটের মাধ্যমে পূরণ হয়। খাবারে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ করতে হয় বলে কাবোর্হাইড্রেটকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে শর্করার মাত্রা বিবেচনা করে কার্বোহাইড্রেট হিসাব করা হয়। ভাত, ময়দা, রুটি, চিরা, সুজি , চালের গুঁড়া, চালের রুটি, সাগু, সেমাই ইত্যাদি কিডনি রোগীর জন্য উত্তম কার্বোহাইড্রেট।

ক্যালরি : কিডনি রোগীদের সাধারণত ক্যালরির চাহিদা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় বাড়ানো হয়। সাধারত প্রতি কেজি ওজনের জন্য রোগী ভেদে ৩০ থেকে ৩৫ কিলোক্যালরি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

প্রোটিন : প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ জরুরি। দীর্ঘ মেয়াদি কিডনি রোগে প্রতি কেজি ওজনের জন্য পয়েন্ট পাঁচ থেকে পয়েন্ট আট গ্রাম প্রোটিন বরাদ্দ করা যেতে পারে। সাধারণত ডাল, বাদাম, কাঁঠালের বিচি, সিমের বিচি ইত্যাদি রোগীকে বর্জন করতে হয়।

প্রতিদিনের দৈনিক প্রোটিনের চাহিদা ডিমের সাদা অংশ, মাছ, মুরগির মাংস ও দুধ বা দই ইত্যাদি থেকে হিসাব করে বরাদ্দ করা হয়। খাসির মাংস ইত্যাদি অবশ্যই এড়িয়ে যেতে বলা হয়।

সবজি : রক্তে পটাশিয়াম, ইউরিক এসিডের মাত্রা, ফসফরাস ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে সবজি হিসাব করা হয়। অতিরিক্ত পিউরিন ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ শাকসবজি, পিচ্ছিল ও গাঢ় লাল রঙের শাক সবজি এড়িয়ে যেতে হবে। কিডনি রোগীদের জন্য চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, ঝিংগা ইত্যাদি পানীয় সবজি উপকারী। উপকারী হলেও এগুলোর পরিমাণ মেনে চলাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কাঁচা সবজির সালাদ, সবজি স্যুপ ইত্যাদি কিডনি রোগীদের এড়িয়ে চলতে হয়।

ফল : কিডনি রোগীদের ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হয়। অক্সালিক এসিড, ইউরিক এসিডস, পটাশিয়াম, রক্তচাপ ছাড়াও আরো অনেক কিছু বিবেচনা করে ফল নির্ধারণ করা হয়। তিন চারটি ফল রোগী ভেদে সীমিত আকারে দেওয়া হয়। যেমন : আপেল, পাকা পেপে, পেয়ারা ইত্যাদি।

তরল/জল : কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে তরল নিয়ন্ত্রণ জরুরি। দৈনিক চা, দুধ, জল সব মিলিয়ে তরলের হিসাব করা হয়। শরীরের ইডিমা, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, সোডিয়ামের মাত্রা, ইজিএসআর- এসবের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে এক থেকে দেড় লিটার, কখনো কখনো দুই লিটার পর্যন্ত তরল বরাদ্দ হয়। অনেকেই অসুস্থ কিডনিকে সুস্থ করার জন্য অতিরিক্ত জল খান, এটি ভুল।

News Desk

Recent Posts

প্রতিদিন ১০ মিনিট হাসলে শরীরে যা ঘটে

বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। তবে হাসিখুশি থাকা যে শরীর ও মনের জন্য কতটা উপকারী, তা হয়তো অনেকেরই…

12 mins ago

গরমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়লে দ্রুত যা করবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এই তাপপ্রবাহে ডায়রিয়ার সমস্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেকের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়েছে। যারা এরই…

3 hours ago

এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে কী কী খাওয়াবেন?

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি হাঁসফাঁস করছে ছোটরাও। এ সময় শিশুদের কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাই এখন বড় প্রশ্ন, প্রত্যেক মা-বাবার জন্য়।…

3 hours ago

ত্বকে হিট র‌্যাশ উঠলে সারাতে কী করবেন?

তাপপ্রবাহে সবার মধ্যেই অস্বস্তি বেড়েছে। গরমে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ত্বকেও দেখা দেয় ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ট্যানসহ নানা সমস্যা। তার মধ্যে…

3 hours ago

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা যে কারণে বিপজ্জনক

কাজের ব্যস্ততা কিংবা আলস্যের কারণে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস হতে পারে বিপজ্জনক। এই অভ্যাসের কারণেই…

4 hours ago

পাইলসের সমস্যা চিরতরে সারবে যে নিয়ম মানলে

পাইলসের সমস্যায় অনেকেই কষ্ট পান। এটি গুরুতর রোগ হলেও অনেকেই অবহেলা করেন। যদি প্রথমদিকেই পাইলসের সমস্যায় চিকিৎসা নেওয়া হয়, তাহলে…

6 hours ago