যেসব খাবার শিশুর খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত! জেনেনিন বিস্তারিত

শিশুর খিটখিটে মেজাজ, বিরক্ত বা মন বিষণ্ন থাকার কারণ হতে পারে বিভিন্ন রকম খাবার। বড়দের মতো শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার একই হলেও সব খাবার দেহে একই কাজ করে না।

শিশু বিকাশ ও অভিভাবকত্ব বিশেষজ্ঞ ডা. কৃতি ইসরানি ‘হেইল অ্যান্ড হার্টি কিডস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “অনেক খাবার বড়দের জন্য স্বাভাবিক বা কম ক্ষতিকর হলেও শিশুদের জন্য তা অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।

শিশুর খাবার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত এমন কয়েকটি খাবার সম্পর্কে জানান এই পুষ্টিবিদ।

চিনি

চিনি যে কোনোভাবেই দেহের জন্য ক্ষতিকর। এটা ইন্সুলিন এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি ঘটায়। চিনি মস্তিষ্কে কোকেনের মতো প্রভাব ফেলে।

এটি রাসায়নিক পদার্থ- ওপিওডস এবং ডোপামিন নিঃসরণে কাজ করে। ফলে হেরোইন বা কোকেনের মতো পদার্থ গ্রহণের মতো চিনিও মস্তিষ্ককে আসক্ত করে ফেলে।

পরে এর অনুপস্থিতি মেজাজ, রাগ, উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা সৃষ্টি করতে পারে।

ক্যাফেইন

এর মধ্যে রয়েছে চকোলেট এবং ক্যাফিনযুক্ত কার্বনেইটেড বা কোমল পানীয়।

শিশুর মস্তিষ্ক একজন প্রাপ্তবয়স্কের মস্তিষ্কের চেয়ে বেশি ক্যাফেইনে প্রভাবিত হয়। যা অনিদ্রা, মাথাব্যথা, পেট খারাপ এবং হৃদস্পন্দন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

এটি গ্রহণের পরে নানান লক্ষণ যেমন- মুড সুইং বা মেজাজের পরিবর্তন হতে পারে। মিষ্টি ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় শিশুর পরিপাকতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে।

হঠাৎ করে ইন্সুলিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, তারপরে দেহে শর্করা কমে যাওয়া বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর তা শিশুদের অতিরিক্ত ওজনের কারণও হতে পারে।

প্রক্রিয়াজাত শস্য

পরিশোধিত শস্য- প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং খুব দ্রুত হজম হয়। যার ফলে রক্তে শর্করা এবং ক্ষুধা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

ফলে ক্ষুধার কারণে হওয়া রাগ, খিটখিটে মেজাজ এমনকি হতাশাও বাড়াতে পারে।

এছাড়াও, পরিশোধিত শস্য এবং চিনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে, শিশুদের রোগের প্রতি আরও সংবেদনশীল করে তোলে। ফলে তারা উদ্বিগ্ন, রাগান্বিত এবং বিরক্ত বোধ করে।

পূর্ণ ননিযুক্ত দুধের তৈরি খাবার

এই ধরনের দুগ্ধজাত খাবারে প্রোটিন ‘কেসিন’ থাকে, যা হজম করা কঠিন। এগুলো খাওয়ার পর অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা প্রদাহের সৃষ্টি করে, ফলে শিশুরা খিটখিটে, আক্রমণাত্মক বা উত্তেজিত হয়ে যায়।

শিশুর ‘ল্যাকটোজ’ অসহিষ্ণুতা বা দুগ্ধজাত প্রোটিনের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অ্যালার্জি না থাকলেও অনেকক্ষেত্রে এসব খাবার সংবেদনশীলতা সৃষ্টি করে ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব রাখে।

মসলাদার খাবার

সাধারণভাবে, মসলাদার, ঝাল বা ‘হট’ খাবার তাপ উৎপন্ন করে।

দেহযন্ত্র অতিরিক্ত তাপ উৎপাদন করলে মনের ওপরেও প্রভাব রাখে। যেমন- রাগ বা হাতাশা উদ্বেগ তৈরি হয়।

আয়ুর্বেদ অনুসারে, শিশুর মাঝে রাগ বা উত্তেজনা বেশি দেখা দিলে মসলাদার খাবার বাদ দিয়ে শীতল খাবার দিতে হবে। হতে পারে তা কম মসলার খাবার কিংবা খাবারে যোগ করা যেতে পারে নারিকেল বা অ্যালো ভেরা।

News Desk

Recent Posts

সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের ট্রিকস

সবার ঘরেই অন্তত একটি করে হলেও সিলিং ফ্যান আছে। এই গরমে যাদের ঘরে এসি বা এয়ার কন্ডিশন নেই, তাদের ভরসা…

12 hours ago

প্রতিদিন ১০ মিনিট হাসলে শরীরে যা ঘটে

বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। তবে হাসিখুশি থাকা যে শরীর ও মনের জন্য কতটা উপকারী, তা হয়তো অনেকেরই…

13 hours ago

গরমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়লে দ্রুত যা করবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এই তাপপ্রবাহে ডায়রিয়ার সমস্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেকের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়েছে। যারা এরই…

15 hours ago

এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে কী কী খাওয়াবেন?

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি হাঁসফাঁস করছে ছোটরাও। এ সময় শিশুদের কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাই এখন বড় প্রশ্ন, প্রত্যেক মা-বাবার জন্য়।…

16 hours ago

ত্বকে হিট র‌্যাশ উঠলে সারাতে কী করবেন?

তাপপ্রবাহে সবার মধ্যেই অস্বস্তি বেড়েছে। গরমে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ত্বকেও দেখা দেয় ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ট্যানসহ নানা সমস্যা। তার মধ্যে…

16 hours ago

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা যে কারণে বিপজ্জনক

কাজের ব্যস্ততা কিংবা আলস্যের কারণে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস হতে পারে বিপজ্জনক। এই অভ্যাসের কারণেই…

17 hours ago