বেশি ঘুমে বাড়ছে স্ট্রোকের ঝুঁকি? গবেষণায় এবার চাঞ্চল্যকর তথ্য

ঘুমাতে ভালোবাসেন এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম না। অনেকে আবার সময় পেলেই একটু ঘুমিয়ে নেন। তাদের ধারণা বেশি ঘুমালে শরীর ভালো থাকে বেশি। কিন্তু এ ধারণা একেবারে ভুল। অনিয়মিত ও অতিরিক্ত ঘুম শরীরের নানা রোগের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। এমনকি এই অভ্যাসের ফলে স্ট্রোকও হতে পারে। এমনটাই দাবি করছে গবেষণা।

চিকিৎসকদের মতে, প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সর্বোচ্চ প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-৯ ঘণ্টা ঘুমানো। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে ক্লান্তি, অবসন্নতা, হজমশক্তি, স্মৃতিশক্তি, হৃদযন্ত্রসহ নানা শারীরিক প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে।

শরীরের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে পরের দিনের জন্য কর্মক্ষম করতে ঘুম জরুরি। তবে দিনে ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো আবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যাদের মধ্যে এ অভ্যাস আছে, তাদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে, এমনই তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়। চীনের প্রায় ৩২ হাজার মানুষের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ পরীক্ষা করে এক গবেষণায় এ তথ্য দিয়েছেন উহানের হুয়াজং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অকাপেশনাল ও এনভাইরনমেন্টাল হেলথ বিভাগের অধ্যাপক গবেষক ড. জিয়াওমিন ঝাং। অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ছিল ৬২ বছর। গড়ে ৬ বছর ফলো-আপের সময়েই প্রায় ১৫০০ এরও বেশি অংশগ্রহণকারী স্ট্রোকের শিকার হন।

শরীরের ক্লান্তি দূর করে পরেরদিন কর্মক্ষম থাকতে ঘুম অতি জরুরি। তবে দিনে ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো আবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যাদের মধ্যে এ অভ্যাস আছে, তাদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে, এমনই তথ্য উঠে এসেছে গবেষণায়।

গবেষণা বলছে, যারা প্রতি রাতে ৯ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘুমিয়েছেন তাদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় ২৩ শতাংশ। অন্যদিকে যাদের ঘুমের মান ভালো তাদের তুলনায় যাদের ঘুম ভালো হয় না তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৯ শতাংশ বেশি।

নিউইয়র্ক সিটির লেনক্স হিল হাসপাতালের স্ট্রোক বিভাগের ডিরেক্টর নিউরোলজিস্ট ডা. সালমান আজহারের মতে, ‘বেশি ঘুমানোর চেয়ে আপনার ঘুমের মান উন্নত করা অত্যন্ত জরুরি’। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অতিরিক্ত ঘুমেরফলে ব্যক্তির কার্যকলাপ কমে যায়। ফলে স্থূলতা, দুর্বলতা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া বা কমে যেতে পারে। খুব বেশি ঘুম বা খারাপ ঘুম আপনার কার্যকলাপকে সীমিত করে। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।’

গবেষকদের মতে, মস্তিষ্কে যখন রক্ত চলাচল কোনও কারণে বন্ধ হয়ে যায় বা কমে যায়, তখনই স্ট্রোক হয়ে থাকে। অনেক সময় তার বাইরে কোনও ধরনের উপসর্গ টেরও পাওয়া যায় না। বেশি ঘুমের সঙ্গে স্ট্রোক হওয়ার সরাসরি কোনো যোগসূত্রতা যদিও এখনও স্পষ্টভাবে জানা যায়নি গবেষণায়।

তবে দেখা গিয়েছে, যারা বেশি ঘুমান তাদের শরীরে কোলেস্ট্রেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া বা স্থূলতার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকি বেশি ঘুমের কারণে মানসিক অবসাদও হতে পারে। এসব সমস্যায় স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।

News Desk

Recent Posts

অতিরিক্ত ঘাম কেন হয়, কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে ঘাম হওয়া খুবই স্বাভাবিক। ঘামের সঙ্গে শরীরের দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়। আর ঘাম হলে শরীরের অতিরিক্ত পানি ও…

8 hours ago

গরমে কেন বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?

শুধু শীত নয়, গরমেও বাড়তে পারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। বিশেষ করে আপনার যদি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে তাহলে…

10 hours ago

টয়লেটে মোবাইল ব্যবহার যে কারণে মারাত্মক

বর্তমানে মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছোট-বড় সবাই। শুধু মোবাইল বললে ভুল হবে, স্মার্টফোনের ব্যবহার এখন বিশ্বব্যাপী। সারাক্ষণই এতে ব্যস্ত হয়ে সময়…

11 hours ago

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যে সবজি খাবেন

গরমে অতীষ্ট এখন জনজীবন। এ সময় শরীরের উপর বিরাট ধকল যাচ্ছে কমবেশি সবারই। তীব্র গরমে রোদে বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ…

12 hours ago

শরীরের যে স্থান পরিষ্কার না করলে বাড়বে রোগব্যাধি

শরীর পরিষ্কার রাখতে গোসল করা জরুরি। তবে জানলে অবাক হবেন, গোসল করলেও শরীরের কয়েকটি স্থান পরিষ্কার হয় না সহজে। আর…

14 hours ago

ওষুধ ছাড়াই কিডনির পাথর গলানোর ঘরোয়া উপায়

কিডনিতে পাথর জমার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। যদিও এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্যগত সমস্যা, তবুও এটি কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে।…

15 hours ago