ব্যায়াম নিয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারণা দেখেনিন একঝলকে

ওজন কমানোর জন্য কি শুধু ব্যায়ামই যথেষ্ট? জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানো বা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের প্রয়োজন কি আছে? আসলে জিম বা ব্যায়াম নিয়ে অনেক ভুল ধারণা আছে আমাদের মাঝে। আসুন জেনে নেই সেগুলো-

* ঘাম ঝরলে ফ্যাটও কমবে:
শরীরে ঘাম ঝরা মানে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যাওয়া। অনেকে ভাবেন, এতে শরীরের ক্যালোরি কমে ও ফ্যাট বার্ন হয়। কিন্তু আসল কথা হলো- বেশি ঘাম ঝরলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীর থেকে জল বেরিয়ে গেলে যে কারো হিট স্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ব্যায়ামের আগে, ব্যায়ামের সময় এবং ব্যায়াম হয়ে গেলে অবশ্যই জল পান করতে হবে।

* ইলেকট্রিক্যাল মাসল স্টিমিউলেটরে মেদ কমে:
অনেকের ধারণা, ব্যায়ামে ইলেকট্রিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট অথবা ইলেকট্রিক্যাল মাসল স্টিমিউলেটরে শরীরের মেদ কমে। আসলে এসব ডিভাইস ব্যবহারে নির্দিষ্ট মাসল গ্রুপে অল্প বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। যা ফলে মাসল কন্সট্রাকশন হয়, কিন্তু ডিভাইস সরালেই আবার যেই সেই। এই ডিভাইসগুলো ইনজরুড সারলেও মেদ কমাতে সহায়ক নয়।

* ব্যায়াম ছেড়ে দিলে ওজন বাড়ে:
ব্যায়াম ছেড়ে দিলে ওজন দ্বিগুণ হয়ে যায়, এটা একদমই ঠিক নয়। আসলে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের মাসল রেশিও ভালো থাকে। শরীরের মেদ ঝরে ও মাসল টোন ভালো থাকে। ব্যায়াম বন্ধ করে দিলে মেদ ঝরে না এবং মানল টোন কমে যায়।

* যত ব্যায়াম, তত ফ্যাট কমে:
সারাদিন ব্যায়াম করে ঘাম ঝরালে প্রচুর ফ্যাট বার্ন হয়। এটি ভ্রান্ত ধারণা। ফ্যাট কমানোর জন্য সারাদিন পরিশ্রমের প্রয়োজন নেই। সঠিকভাবে মাত্র ৩০-৪০ মিনিট ব্যায়াম করলেই যথেষ্ট। সারাদিন ব্যায়ামে ফ্যাটের বদলে শরীরের প্রয়োজনীয় পদার্থ, যেমন- গ্লাইক্লোজেন, এ্যানার্জি ইত্যাদি কমে যেতে পারে। সুতরাং, অতিরিক্ত ব্যায়াম এ্যানার্জি নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু নয়।

* ব্যায়াম করা মানেই মেদ ঝরানো:
কেবল ব্যায়ামে যে মেদ ঝরবে এমনটা নয়। আমাদের জিন, নিয়মিত কায়িক শ্রম আর খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ইত্যাদিও মেদ ঝরানোর ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। এক এক জনের শরীরের অনুশীলনের ধরন আর সহনশীলতা একেক রকম। ফলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবার একই পরিমাণ ওজন কমবে না।

* যোগব্যায়ামে মেদ ঝরে:
অনেকে ভাবেন, যোগব্যায়ামে শরীরের মেদ ঝরে। ধারণাটি ভুল। মূলত যোগব্যায়ামে আত্মবিশ্বাস, শ্বাস-প্রশ্বাসে উপকার, ভারসাম্য, শারীরিক সক্ষমতা- অনেক ধরনের উপকারই হয়। কিন্তু এর মাধ্যমে মোটেও শরীরের মেদ কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।

* ওষুধ খেলে ওজন কমে:
ওষুধ বা ডায়েট পিল ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। এতে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুব একটা প্রভাব ফেলে না। এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। আবার জেনে রাখা ভালো- ডায়েট পিলে অম্ফিথিটামাইন নামক একটি স্টিমিউলেন্ট থাকে, যা অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ, মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরানো, মাইগ্রেশনের কারণ হয়ে থাকে। এগুলো ভীষণ ক্ষতিকর যা আমাদের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

News Desk

Recent Posts

ত্বকের ফাটা দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

শরীরের ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক ত্বকের সৌন্দর্য অনেকটাই কমিয়ে দেয়। এই দাগ একবার পড়লে তা আর সহজে দূর হয়…

1 hour ago

ত্বকের যে রোগ অবহেলা করলেই বিপদ হতে পারে

ত্বকে নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন কারণে এসব চর্মরোগ হয়ে থাকে। তবে অনেকেই প্রথমদিকে এসব রোগকে উপেক্ষা করেন।…

2 hours ago

কিডনি ও লিভার সুরক্ষিত রাখবে যে পানীয়

‘ডিটক্স ড্রিংকস’ এর উপকারিতা অনেক। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এ পানীয়। সঙ্গে শরীরের সব ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে ক্লিঞ্জার…

2 hours ago

দ্রুত ওজন কমাবে গুড়-লেবুর পানীয়

চিনির বিকল্প হিসেবে গুড় সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর উপাদান। বরং গুড় শরীরের জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন…

2 hours ago

ডিম খেয়েই বশে রাখুন ডায়াবেটিস-কোলেস্টেরল

ডিম একটি সুপারফুড হিসেবে বিবেচিত হয়। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান আছে ডিমে। তবে ডিম নিয়ে অনেকের মনেই নানা…

2 hours ago

এই ফলেই কমবে জয়েন্টের ব্যথা, ভালো থাকবে হার্ট-চোখ

গ্রীষ্মকাল আসতেই বাজারে ভরে গেছে তরমুজ। লাল টকটকে সুস্বাদু এক ফল এটি। দেখতেও যেমন আকর্ষণীয়, তেমনিই লোভনীয় এর স্বাদ। জানলে…

5 hours ago