আখের রস খেলে কী হয়? জেনেনিন বিস্তারিত

খোলস যতটা শক্ত, ভেতরটা ঠিক ততটাই রসালো। চিবুলেই মিষ্টি রসে ভরে যায় মুখ। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কীসের কথা বলছি? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। বলছি আখের কথা।

আখে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, উপকারি অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থিয়ামিন এবং রাইবোফ্লেবিন আমাদের শরীরের একাধিক উপকারে আসে।

আখের রসে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড প্রেগন্যান্সি সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা দূরে রাখে। সেই সঙ্গে শিশুর শারীরিক উন্নতি ঘটায়। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত আখের রস খাওয়া পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে একেবারে তলার দিকে থাকার কারণে আখের রস খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার কোননো আশঙ্কা থাকে না। বরং এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ম করে আখের রস খাওয়া পরামর্শ দেয়া হয়।

আখের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সেইসঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আখের রসে উপস্থিত ল্যাক্সেটিভ প্রপাটিজ বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটায়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমে। আখে থাকা অ্যালকেলাইন প্রপাটিজ গ্যাস-অম্বলের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আখের একাধিক উপকারি উপাদান ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন সারাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনের মতো সমস্যা দূর করতেও সাহায্য় করে। কিডনি ফাংশনকে ঠিক রাখতেও আখের রসের বিকল্প হয় না।

আখের কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন, পটাশিয়াম এবং অন্য়ান্য় উপকারি উপাদান শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন এবং শরীর, দুইই চনমনে হয়ে ওঠে। আখের রস শরীরের অন্দের প্লাজমা এবং বডি ফ্লইডের ঘাটতি মেটায়।

লিভারকে সুস্থ রাখতে আখের রস দারুণ কাজে আসে। জন্ডিসের প্রকোপ কমাতে রোগীকে আখের রস খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। শুধু তাই নয়, শরীরের পুষ্টির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি প্রোটিনের চাহিদা মেটাতেও আখ বিশেষ ভূমিকা নেয়।

নিয়মিত আখের রস খাওয়া শুরু করলে শরীরের ফ্লবোনয়েড নামক একটি বিশেষ উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এই উপাদানটি ক্যান্সার সেলেদের ধ্বংস করে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আখ খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্লেবোনয়েডের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। এই দুটি উপাদান ত্বক এবং শরীরের ভিতরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে শরীরের পাশাপাশি ত্বকের বয়স বাড়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

প্রচুর মাত্রায় ক্যালসিয়াম থাকার কারণে নিয়মিত আখ খেলে হাড় শক্তপোক্ত তো হয়ই, সেই সঙ্গে দাঁতের স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। ক্যাভিটি এবং ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাও দূর হয়।

News Desk

Recent Posts

সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের ট্রিকস

সবার ঘরেই অন্তত একটি করে হলেও সিলিং ফ্যান আছে। এই গরমে যাদের ঘরে এসি বা এয়ার কন্ডিশন নেই, তাদের ভরসা…

3 hours ago

প্রতিদিন ১০ মিনিট হাসলে শরীরে যা ঘটে

বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। তবে হাসিখুশি থাকা যে শরীর ও মনের জন্য কতটা উপকারী, তা হয়তো অনেকেরই…

4 hours ago

গরমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়লে দ্রুত যা করবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এই তাপপ্রবাহে ডায়রিয়ার সমস্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেকের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়েছে। যারা এরই…

7 hours ago

এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে কী কী খাওয়াবেন?

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি হাঁসফাঁস করছে ছোটরাও। এ সময় শিশুদের কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাই এখন বড় প্রশ্ন, প্রত্যেক মা-বাবার জন্য়।…

7 hours ago

ত্বকে হিট র‌্যাশ উঠলে সারাতে কী করবেন?

তাপপ্রবাহে সবার মধ্যেই অস্বস্তি বেড়েছে। গরমে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ত্বকেও দেখা দেয় ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ট্যানসহ নানা সমস্যা। তার মধ্যে…

8 hours ago

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা যে কারণে বিপজ্জনক

কাজের ব্যস্ততা কিংবা আলস্যের কারণে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস হতে পারে বিপজ্জনক। এই অভ্যাসের কারণেই…

8 hours ago