জেনেনিন অফিসে শান্তি পাওয়ার কিছু সহজ উপায়

আপনি যে অফিসে কাজ করছেন, সে অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এমনকি মালিক এটাই চাইবেন যেন কর্মক্ষেত্রে আপনার মধ্যে কোনো অসন্তোষ না থাকে। কারণ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্যে অসস্তোষ থাকলে কোম্পানির উৎপাদন ব্যাহত হবে। পিছিয়ে পড়বে কোম্পানি। আপনি ব্যক্তিগতভাবেও অসন্তোষ নিয়ে অফিসে কাজ করার আগ্রহ পাবেন না। তাই কর্মক্ষেত্রে সুখী হওয়ার কিছু মূলমন্ত্র জানা চাই আপনার।

গবেষণায় যা জানা গেছে : গ্যালাপ পোল নামের ম্যানেজমেন্ট কনসালটিং কোম্পানির এক জরিপে জানা গেছে, ৭০ শতাংশের মতো কর্মচারী-কর্মকর্তা তাদের কর্মক্ষেত্রে সন্তুষ্ট না। তাদের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রের আবেগজনিত একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, যাতে করে তাদের কাজের গতি কমে গেছে।

কেন কর্মক্ষেত্রে শান্তি জরুরি? : ওই গবেষণায় জানা গেছে, কর্মক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট কর্মচারী তার নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই কাজের গতি হারিয়ে মালিকের স্বার্থের বিরুদ্ধে চলে যায়। এমনকি যদি কর্মচারী-কর্মকর্তার অসন্তোষ বেড়েই চলে তখন তারা কোম্পানির বিভিন্ন উপকরণ চুরি করে, অন্য কর্মচারীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে ও কোম্পানির ক্লায়েন্ট/কাস্টমারদেরও তাড়িয়ে দেয়।

ইনক্রিমেন্ট কি সমস্যার সমাধান? : প্রথমেই মনে হবে বেতনের ভালো ইনক্রিমেন্ট এ ধরনের অসন্তোষ দূর করবে। তবে জরিপে জানা গেছে, এটা স্থায়ী নয়, অস্থায়ী এক সমাধান। উল্টো ধারাবাহিক বেতন বৃদ্ধি কর্মকর্তার উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিতে পারে। কারণ কর্মকর্তারা এটা ভেবে বসতে পারেন তাদের পারফরম্যান্সের সঙ্গে ইনক্রিমেন্টের কোনো সংযোগ নেই। তবে এটাও ঠিক যে, ইনক্রিমেন্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর আত্মবিশ্বাস, কাজের গতি বাড়িয়ে দেয়।

তাহলে কর্মক্ষেত্রে শান্তি কীসে? : গবেষণায় যে মূল বিষয়টা জানা গেছে, কর্মক্ষেত্রে একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর শান্তি আসে মূলত প্রতিদিন তার স্বাধীনভাবে কাজ করার ওপর। আর এই স্বাধীনতার মূল বৈশিষ্ট্য হলো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকা। কোনো ক্লায়েন্টকে মেইল করা সহ অফিসের কোনো কাজে সিনিয়রদের শরণাপন্ন না হয়ে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, এমন ক্ষমতা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসে সুখের অনুভূতি দেয়। এছাড়া কোনো নতুন আইডিয়া শেয়ার করতে পারা, কোনো কাজ বা প্রজেক্টে সুপারিশ করতে পারার ক্ষমতাও তাদের মনে শান্তি এনে দেয়।

আরো কিছু ফ্যাক্টর : যে সিনিয়রের তত্ত্বাবধানে কর্মচারী কাজ করেন, ওই সিনিয়র যদি স্কুলের শিক্ষকের মতো খবরদারি করেন, তাহলে কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেবেই। তাই সিনিয়ররা সেরকম আচরণ না করলে, কর্মচারী তার দায়িত্ব স্বাধীনভাবে পালন করার সুযোগ পেলে, অফিসে কাজের সময়টা মনের মতো হলে, এমনকি ঘরে বসেও অফিসের কিছু কাজ করার সুযোগ পেলে কর্মচারীরা খুশি হন। মূল কথা, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকলে, সিনিয়ররা প্রতিনিয়ত খবরদারি না করলে, স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে শান্তিতে থাকেন।

News Desk

Recent Posts

একমাস চিনি না খেলে শরীরে যে পরিবর্তন ঘটে

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কমবেশি চিনিযুক্ত খাবার সবাই খান। তবে স্বাস্থ্য সচেতনরা অবশ্য মিষ্টি খাবার দেখলেই ভয় পান! কারণ শরীরের জন্য চিনিযুক্ত…

16 mins ago

তাল মিছরি কেন খাবেন?

তাল মিছরি আমাদের পরিচিত একটি খাবার। এটি মূলত বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে পথ্য হিসেবে কাজ করে। সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে রক্তস্বল্পতা- অনেক…

2 hours ago

অতিরিক্ত ঘাম কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও…

19 hours ago

নখ দেখেই বুঝে নিন শরীরে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে কি না

শরীরে কোনো রোগ বাসা বেঁধেছে কি না, তার ইঙ্গিত আগে থেকেই দেয় শরীর। তবে অনেকেই তা টের পান না, আবার…

21 hours ago

কাচের বোতলে কেন পানি খাবেন?

পানির অপর নাম জীবন। দৈনিক পর্যাপ্ত পানি না পান করলে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। যা শারীরিক বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।…

21 hours ago

সকালে নাস্তা না করলে যে রোগের ঝুঁকি বাড়ে

সকালের নাস্তা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর উপরই সারাদিন শরীরের শক্তি নির্ভর করে। সকালে পুষ্টিকর খাবারে পেট ভরালে সারাদিন অ্যানার্জি…

21 hours ago