যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি গর্ভবতী কি না

গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে পিরিয়ডের তারিখ মিস করাকেই ধরে নেয়া হয়। প্রত্যাশিত কিংবা অপ্রত্যাশিত হোক না কেন, গর্ভাবস্থার নিশ্চিতকরণের জন্য অপেক্ষা উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়। যাইহোক, কিছু লক্ষণ রয়েছে যার সাহায্যে পরীক্ষা না করেই গর্ভাবস্থার আগাম খবর জানতে পারবেন।

এটি গর্ভাবস্থা না পিএমএস?
যেহেতু গর্ভাবস্থার প্রথম দিকের লক্ষণগুলো হরমোনের পরিবর্তনকে প্ররোচিত করে, তাই অনেকের কাছে এগুলো পিএমএসের মতোই মনে হয়। যাইহোক, পিএমএস কেবল অল্প কিছুদিন থাকে, তবে গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলি দীর্ঘায়িত হয় এবং শরীরে অন্যান্য কিছু অদ্ভুত পরিবর্তন দেখা দেয়। জেনে নিন লক্ষণগুলো-

ক্র‌্যাম্প
মাসিকের আগে আগে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এই ক্র‌্যাম্প হতে পারে গর্ভবস্থার আগাম লক্ষণ। কখনো কখনো ভ্রূণটি জরায়ুতে রোপনের সময় নারীরা ক্র্যাম্পিং এবং ব্যথা অনুভব করতে পারে। এটি সব সময় নাও ঘটতে পারে তবে এটি একটি ইতিবাচক লক্ষণ।

নির্দিষ্ট কিছু খাবারে অরুচি
ইস্ট্রোজেন ইন্দ্রিয়কে প্রভাবিত করে যার কারণে গর্ভাবস্থায় যেকোনো গন্ধের তীব্রতা অনুভূত হতে পারে। আপনি গর্ভাবস্থার একদম প্রথম দিনগুলোতে কিছু খাবারে উৎকট গন্ধ পেতে পারেন। পেট ফাঁপা এবং বমি বমি অনুভব করতে পারেন। কারো কারো মর্নিং সিকনেস দেখা দিতে পারে।

অত্যধিক তৃষ্ণা বা প্রচন্ড খাবার প্রবণতা
যদি দেখেন যে আপনি গ্যালন গ্যালন জল পান করছেন তাহলে বিস্মিত হবেন না। রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে আপনি আপনার পিরিয়ড মিস করার আগেও অত্যন্ত তৃষ্ণার্ত বোধ করতে পারেন। হরমোন স্ফীতির জন্য আপনি সবসময় ক্ষুধার্ত অনুভব করতে পারেন।

স্তনের আকার পরিবর্তন
গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণের একটি হলো স্তনের আকারে পরিবর্তন। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে স্তনের চারদিকে দাগযুক্ত হয়। ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়ার কারণে স্তনের কোমলতা, ফোলাভাব বৃদ্ধি পায়। এসময় শরীর অনেকটাই সংবেদনশীল হয়ে যায়।

সব সময় প্রস্রাবের চাপ
পিরিয়ডের তারিখ এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আপনার ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ পাচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা বলেন, গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে কিডনি বর্জ্য ফিল্টার করা শুরু করে। ফলে আপনাও ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ আসতে পারে। এটি গর্ভধারণের দুই সপ্তাহের ভেতরেই দেখা দেয়।

শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
শরীরের তাপমাত্রার দিকে নজর দিতে হবে যাতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন শনাক্ত করা যায়। ডিম্বস্ফোটনের আগে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং আপনার পিরিয়ড চক্রের পরে স্বাভাবিকে ফিরে আসে। কিন্তু গর্ভাবস্থার পুরো সময় জুড়ে, শরীরের মৌলিক তাপমাত্রা বেশি থাকার প্রবণতা থাকে। গর্ভরোপণ হয়ে গেলে, সিস্টেমের মধ্যে একটি নতুন জীবনকে জায়গা দেওয়ার জন্য শরীর নিজেকে প্রস্তুত করে, যার ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ইমিউন সিস্টেম গর্ভকালীন সময়টি পার করার জন্য নিজেকে পুনরায় সাজিয়ে নেয়। ডিম্বস্ফোটনের পর আপনার দেহের তাপমাত্রা যদি ২০ দিনের বেশি সময় ধরে বেশি থাকে, তবে এটি একটি নতুন যাত্রার সূচনাকে চিহ্নিত করে।

News Desk

Recent Posts

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

5 hours ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

12 hours ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

12 hours ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

13 hours ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

1 day ago

বিশ্বব্যাপী যে কারণে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব

গরমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়ে মৃতের সংখ্যাও। আজ ১৬ মে জাতীয় ডেঙ্গু দিবস। ডেঙ্গু…

1 day ago