Categories: Featured

যমজ সন্তান কেন হয়? দেখেনিন বিশেষজ্ঞরা কি বলছে

যমজ সন্তান কেন হয়? এ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। দুইটি বাচ্চার একই রূপ। তাদের চাল-চলন, বাচন ভঙ্গি প্রায় এক। মনে হয় একই গর্ভে দুইটি প্রাণের একট শরীর। পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার অপরূপ দান যমজ সন্তান। যমজ সন্তান হওয়াটা প্রায় সকলের কাছে অত্যান্ত আনন্দের। যমজ সন্তানদের একের প্রতি অন্যের থাকে নিখাদ ভালোবাসা। যেন তাদের শরীর ও মন চলে একই নির্দেশনায়। কেন হয় এই যমজ সন্তান? যমজ সন্তান হওয়ার কারণ সম্পর্কে অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে। আসুন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দেয়া তথ্য মতে যমজ সন্তান হওয়ার কারণ জেনে নেয়া যাক।

চিকিত্সা শাস্ত্র অনুযায়ী, মায়ের গর্ভে দুটি শুক্রাণু একসঙ্গে একটি ডিম্বাণুর সঙ্গে অথবা দুটি ভিন্ন ডিম্বাণুর সঙ্গে নিষিক্ত হয়ে যমজ সন্তানের জন্ম হয়। দুটি ভিন্ন ডিম্বাণুর সঙ্গে দুটি শুক্রাণু নিষিক্ত হয়ে যে যমজের জন্ম হয়, বৈশিষ্ট্যগতভাবে তারা কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু একই ডিম্বানুর সাথে দুটি শুক্রানু নিষিক্ত হয়ে সমান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি শিশুর জন্ম হলেও তারা যমজ হয়, এই যমজদের বৈশিষ্ট্য অনেকটাই একই রকম। শিশু দুটি পুরোপুরি একই জিন বহন করার কারণে তাদের লিঙ্গ এবং সব শারীরিক বৈশিষ্ট্য একই রকম হয়। এদের আইডেন্টিকাল টুইন বলা হয়।

পৃথিবীতে জমজ সন্তান জন্ম নেয়ার দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার ছোট্ট শহর ইগবো ওরা। এখানে প্রতি হাজারে যমজের সংখ্যা গড়ে ১৫৮টি! এই কারণেই ‘ইগবো ওরা’ কে বলা হয় যমজের রাজধানী।

ইউরোপে জন্ম নেওয়া প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে গড়ে ১৬টি যমজ হয়। যমজের সংখ্যার দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এই সংখ্যা গড়ে ৩৩টি। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের দেশগুলোতে যমজের হার প্রতি হাজারে ৪০ থেকে ৪৫টি। ইগবো ওরায় এই সংখ্যক যমজের ঘটনা বিস্মিত করেছে বিজ্ঞানীদেরও। ব্রিটিশ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক নিলান্ডার দশ বছরের বেশি সময় ধরে কিছু দেশের ওপর গবেষণা করেছেন। কিন্তু নাইজেরিয়ার শহর ওয়ো স্টেট থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরত্বের এই ছোট্ট শহরটিতে এত সংখ্যক যমজের রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি।

আপনি ইগবো ওরায় বেড়াতে গেলে যাদের দেখবেন মনে হবে দুইটা করে দেখছেন। রাস্তায় বের হলেই চোখে পড়বে অসংখ্য যমজ। বেশিরভাগ বাড়িতেই রয়েছে অন্তত এক জোড়া সন্তান। এখানে কেউ গর্ভবতী হলেই ধরে নেওয়া হয় যমজ সন্তান জন্ম নিতে যাচ্ছে। যমজ না জন্মানোটাই এখানে বিস্ময়ের ব্যাপার।

ইগবো ওরায় যমজ সন্তানের আধিক্যের রহস্য জানতে তাই এই অঞ্চলের মানুষের জীবনধারা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন প্যাট্রিক নিলান্ডার। শান্ত শীতল প্রকৃতির এই অঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি ও বাণিজ্য। গবেষকদের ধারণা, যমজ সন্তানের আধিক্যের পেছনে থাকতে পারে এই অঞ্চলের নারীদের খাদ্যাভাস। আফ্রিকার প্রধান খাদ্যশস্য কাসাভা (এক ধরনের আলু) এখানকার নারীদের অন্যতম প্রিয় খাবার। আমালা, গারি, ফুফুসহ বিভিন্ন ধরনের খাবার বানানো হয় এই কাসাভা দিয়ে।

ওয়ো স্টেটের ইউনিভার্সিটি অব লোগোস টিচিং হসপিটালের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এখানকার কাসাভা এবং ইয়াম টিউবারে রয়েছে বিশেষ ধরনের রাসায়নিক যা কিনা যমজ সন্তান জন্মানোতে ভূমিকা রাখতে পারে।

তবে এখানকার অধিবাসীদের মতে, কাসাভা নয়, বরং তাদের বিশেষ কিছু স্যুপের কারণেই এখানে যমজের ঘটনা বেশি ঘটে। ইগবো ওরার গোত্র প্রধান বলেন, আমরা অনেক বেশি ওকরা পাতা এবং ইলাসা স্যুপ পান করি। এছাড়া অনেক বেশি ইয়ামও খাওয়া হয়, যার প্রভাবে যমজ সন্তান বেশি জন্মায় এই অঞ্চলে।

TS

News Desk

Recent Posts

সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের ট্রিকস

সবার ঘরেই অন্তত একটি করে হলেও সিলিং ফ্যান আছে। এই গরমে যাদের ঘরে এসি বা এয়ার কন্ডিশন নেই, তাদের ভরসা…

1 hour ago

প্রতিদিন ১০ মিনিট হাসলে শরীরে যা ঘটে

বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। তবে হাসিখুশি থাকা যে শরীর ও মনের জন্য কতটা উপকারী, তা হয়তো অনেকেরই…

2 hours ago

গরমে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়লে দ্রুত যা করবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য হলো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। এই তাপপ্রবাহে ডায়রিয়ার সমস্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই অনেকের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়েছে। যারা এরই…

5 hours ago

এই গরমে শিশুকে সুস্থ রাখতে কী কী খাওয়াবেন?

তীব্র গরমে বড়দের পাশাপাশি হাঁসফাঁস করছে ছোটরাও। এ সময় শিশুদের কীভাবে সুস্থ রাখবেন তাই এখন বড় প্রশ্ন, প্রত্যেক মা-বাবার জন্য়।…

5 hours ago

ত্বকে হিট র‌্যাশ উঠলে সারাতে কী করবেন?

তাপপ্রবাহে সবার মধ্যেই অস্বস্তি বেড়েছে। গরমে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার পাশাপাশি ত্বকেও দেখা দেয় ঘামাচি, ফুসকুড়ি, ট্যানসহ নানা সমস্যা। তার মধ্যে…

6 hours ago

দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখা যে কারণে বিপজ্জনক

কাজের ব্যস্ততা কিংবা আলস্যের কারণে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব আটকে রাখেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অভ্যাস হতে পারে বিপজ্জনক। এই অভ্যাসের কারণেই…

6 hours ago