মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব রুখতে মেনেও চলুন কিছু নিয়ম! জেনেনিন বিস্তারিত

অনেক দিন হলো বাচ্চাকাচ্চা হচ্ছে না। যাকে বলা হয় বন্ধ্যাত্ব। চিকিৎসকরা বলেন ডিম্বাণুতে সমস্যা থাকলেই এ রকম হয়। এমন হলে দৈনন্দিন যে খাবার খান তাতে সামান্য রদবদল করুন। যার ফলে সুফলও পেতে পারেন।

এই খাবার হোক লাল বা বাদামি চালের ভাত, খোসাওলা ডাল, আটার রুটি, হোল গ্রেন পাস্তা-নুডুলস ইত্যাদি৷ এর সঙ্গে অপকারি ট্রান্স ফ্যাট বাদ দিয়ে মাছ, মাংস, ডিমের পাশাপাশি ডাল, ছোলা, দুধ ও নিরামিষ জাতীয় প্রোটিন খাবেন।

নিশ্চয়ই ভাবছেন এসব খাবারে কি করে কাজ হবে! তাহলে জানুন, ৮ হাজার বন্ধ্যা মহিলার উপর ৮ বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এই খাবারের তালিকাটি বানিয়েছেন। তাতে কাজ হয়েছে আশাতীত ভাবে৷ এই পরীক্ষাটি হয়েছে ‘নার্সেস হেলথ স্টাডি’ নামের একটি স্টাডিতে।

এই ফার্টিলিটি ডায়েট খেলে ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণগত মানের উন্নতি হয়৷ আর আশঙ্কাজনকভাবে কমে হাই কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক জাতীয় অসুখ-বিসুখ৷ ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে।

তবে ডাক্তার দেখানো বন্ধ করবেন না। তাঁর উপদেশ মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাবেন এবং ওষুধপত্রও খাবেন। সঙ্গে রাখবেন এই ডায়েট৷ যার ফলাফল পাবেন অতি দ্রুত।

এবার বিস্তারিত জেনে নিন :

* ডিম্বাণুর ক্ষতি করে ট্রান্স ফ্যাট। এর সঙ্গে সঙ্গে হাইকোলেস্টেরল, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ওজনও বাড়ায় এসব ফ্যাট৷ অতএব প্রক্রিয়াজাত খাবার, বেকড খাবার, বনস্পতি, মার্জারিন, ভাজাভুজি খাওয়া বন্ধ করুন।

* মুফা ও পুফাসমৃদ্ধ খাবার খাবেন। ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে ডায়াবেটিস ও ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা ঠেকায় এরা। আর কমায় শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রদাহ। সব মিলিয়ে উপকার হয় ডিম্বাণুর৷ বিভিন্ন ধরনের বাদাম, অ্যাভোক্যাডো, ঠান্ডা জল মাছ স্যামন, সারডিন, ইলিশ, ঘি–মাখন, ডিমের কুসুম, তৈলাক্ত মাংস ইত্যাদি খাবেন কম কম৷ আর সর্ষে, সূর্যমুখী, সয়াবিন, অলিভ-এ জাতীয় তেলও নিবেন কমিয়ে।

* পর্যাপ্ত উদ্ভিজ্জ জাতীয় প্রোটিন খাবেন৷ মাছ, মাংস, ডিমের পাশাপাশি এ তালিকায় রাখুন মটরশুঁটি, বিনস, সয়াবিন, টোফু, পনির, ছোলা, রাজমা ইত্যাদি।

* যে কার্বোহাইড্রেট চট করে হজম হয়ে রক্তে মিশে যায় তা বাদ দিয়ে যা ধীর গতিতে হজম হয় এমন কার্বোহাইড্রেট খাবেন। যার ফলে রক্তের সুগার লেভেল ও ইনসুলিনের কার্যকারিতা ঠিক থাকবে৷ আর তাতে ভাল থাকবে ডিম্বাণুর মান৷ কাজেই বাদ দিন সাদা চালের ভাত, ময়দা, চিনি, মিষ্টি, ফলের রস ইত্যাদি। আর খাবারে রাখুন হোল গ্রেন, শাকসব্জি, ফল, বিনস ইত্যাদি।

* দুধ খাবেন মাখন না তুলে। অর্থাৎ স্কিম্ড দুধের বদলে খান হোল মিল্ক, ফুল ফ্যাট ইয়োগার্ট, এমনকি মাঝে মধ্যে আইসক্রিমও।

* এই খাবারে থাকবে মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট। বিশেষ করে ফোলিক অ্যাসিড, দিনে ৪০০ মাইক্রোগ্রাম করে৷ ডিম্বাণুর মান উন্নত করে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে এর ভূমিকা অনেক।

* আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। যেমন হোল গ্রেন সিরিয়াল, পালং, বিনস, কুমড়া, টমেটো, বিট ইত্যাদি খেলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা কমবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

* মিষ্টি স্বাদের ঠান্ডা পানীয় বাদ দিয়ে ঠান্ডা জল খেতে পারেন৷ চা–কফিও খেতে পারেন মাত্রা রেখে। কিন্তু কোমল পানীয় একদমই নয়৷ এগুলো ডিম্বাণুর সমস্যা করে।

এ ছাড়া ওজন খুব বেশি বা খুব কম থাকলেও পিরিয়ডের গোলমাল হতে পারে। এর হাত ধরেই শুরু হতে পারে ডিম্বাণুর সমস্যা৷ কাজেই ওজন যথাসম্ভব ঠিক রাখার চেষ্টা করুন। বিএমআই (ওজনের সূচক) ২০–২৪–এর মধ্যে থাকলে সবচেয়ে ভাল। সঠিক খাবার খেয়ে ও হালকা ব্যায়াম করে ধীরে ধীরে ওজন স্বাভাবিক করার চেষ্টা করুন।

News Desk

Recent Posts

ঘরে রক্তচাপ মাপার সময় যে ভুলগুলো করবেন না

হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ হলো একটি ক্রনিক রোগ। অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে এই রোগ থাকে। পাশাপাশি এর কারণে শরীরের অন্যান্য…

7 hours ago

সন্তানের মোবাইল আসক্তি কমাতে কী করবেন?

ছোট্ট সোনামনির হাতে কমবেশি সবাই মোবাইল তুলে দেন কোন না কোনো সময়। তবে কিছু সময়ের জন্য মোবাইল দেখা এক সময়…

9 hours ago

ক্যানসার হবে কি না জানতে পারবেন ৭ বছর আগেই

ক্যানসারের নাম শুনলেই কমবেশি সবাই আঁতকে ওঠেন। কঠিন এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ক্যানসার রোগের আগাম খবর পেতে সারা…

1 day ago

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

2 days ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

2 days ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

2 days ago