আপনার কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা বুঝুন এই ৫লক্ষন দেখেই, জেনেনিন

কিডনি শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ। এটি শরীর থেকে বর্জ্য ফিল্টার করে থাকে। শারীরিক বিভিন্ন রোগ, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব রোগের কারণে কিডনি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলোকে ফিল্টার করতে পারে না। ফলে শরীরে টক্সিন তৈরি হয়।

অন্যদিকে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলেও তা শরীরে প্রথমদিকে প্রকাশ পায় না। কিডনি রোগ অনেকটা ‘সাইলেন্ট কিলার’। কয়েকটি লক্ষণ আছে যেগুলো দেখে আপনি বুঝতে পারেন কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে কি না-

গোড়ালি ও পা ফোলা

কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য ও অতিরিক্ত সোডিয়াম ফিল্টার করতে সাহায্য করে। যখন কিডনি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে অক্ষম হয়, তখন শরীর সোডিয়াম ধরে রাখতে শুরু করে। এ কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ফুলতে থাকে। এক্ষেত্রে চোখ, মুখ, হাত, পা, গোড়ালি ও পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে।

দুর্বলতা ও ক্লান্তি

সারাক্ষণ ক্লান্ত বা দুর্বল বোধ করা সব ধরনের অসুখেরই প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায়। কিডনির ব্যাধি গুরুতর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি দুর্বল ও ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। এমনকি কিছু সাধারণ ঘরোয়া কাজ করা বা একটু হাঁটাও কিডনি রোগীর জন্য কষ্টকর হতে পারে। এটি কিডনির অকার্যকারিতার কারণে রক্তে টক্সিন জমা হলে ঘটে।

ক্ষুধা কমে যাওয়া

শরীরে বিষাক্ত পদার্থ ও বর্জ্য জমা হলে ক্ষুধা কমে যেতে পারে। এ কারণে ওজন কমতে শুরু করে। ক্ষুধা কম হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে ভোরে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া। এই অপ্রীতিকর অনুভূতিগুলো আপনাকে খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা কমিয়ে দেয়।

প্রস্রাবের বেগে পরিবর্তন

একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষ দিনে ৬-১০ বার প্রস্রাব করে। এর চেয়ে বেশি বা কম প্রস্রাব কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তি হয় খুব কম বা খুব ঘন ঘন প্রস্রাব করেন।

উভয় অবস্থাই কিডনির জন্য ক্ষতির কারণ। অনেকেই প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত দেখতে পান। এটি তখনই ঘটে যখন কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় রক্তের কোষগুলো প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে শুরু করে।

শুষ্ক ত্বক ও চুলকানি

কিডনি সমস্যার আরও একটি অন্যতম লক্ষণ প্রকাশ পায় ত্বকে। এক্ষেত্রে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক। একই সঙ্গে চুলকানিও হতে পারে। এমনটি হওয়ার কারণ হলে শরীরের ক্ষতিকর টক্সিন বেরিয়ে যেতে পারে না বলে রক্তে জমা হতে শুরু করে।

এ কারণে ত্বক হয়ে পড়ে বিবর্ণ, শুষ্ক। ফলে ত্বকে চুলকানির সৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে ঘাম দুর্গন্ধযুক্ত হয়। কিডনির সমস্যাও হতে পারে হাড়ের রোগ।

প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। যা শুধু সময়মতো উপসর্গ নির্ণয় করা গেলেই সম্ভব। যারা উচ্চ রক্তচাপ, সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রায় ভুগছেন তাদের কিডনি ব্যাধি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

এমন ব্যক্তিদের উচিত বছরে অন্তত একবার হলেও পুরো শরীরের চেকআপ করানো। নিয়মিত মেডিকেল চেক-আপ প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন রোগ শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

News Desk

Recent Posts

একনাগাড়ে হাঁচি হলে থামাবেন যেভাবে

হাঁচি তো কমবেশি সবাই দেন। সর্দি থেকে শুরু করে ধুলাবালি বা অ্যালার্জির কারণেই মূলত হাঁচি বেশি হয়। বিশেষ করে অ্যালার্জিতে…

40 mins ago

প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে যা ঘটে

কলা ছোট-বড় সবারই প্রিয় একটি ফল। এটি যেমন সুস্বাদু এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। একটি কলা আপনার শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি যোগাতে…

2 hours ago

ডাবের পানি যেভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে

গরমে এক গ্লাস ঠান্ডা ঠান্ডা ডাবের পানি মুহূর্তেই শরীরে প্রশান্তি এনে দেয়। ঠিক একইভাবে রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর…

2 hours ago

একমাস চিনি না খেলে শরীরে যে পরিবর্তন ঘটে

প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কমবেশি চিনিযুক্ত খাবার সবাই খান। তবে স্বাস্থ্য সচেতনরা অবশ্য মিষ্টি খাবার দেখলেই ভয় পান! কারণ শরীরের জন্য চিনিযুক্ত…

3 hours ago

তাল মিছরি কেন খাবেন?

তাল মিছরি আমাদের পরিচিত একটি খাবার। এটি মূলত বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে পথ্য হিসেবে কাজ করে। সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে রক্তস্বল্পতা- অনেক…

4 hours ago

অতিরিক্ত ঘাম কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও…

21 hours ago