ডায়াবেটিস রোগীরা যে ৫ ভুল একেবারেই করবেন না

ডায়াবেটিসে আক্রন্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। একবার ডায়াবেটিস শরীরে বাসা বাঁধলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা বেশ মুশকিল। জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার মাধ্যমে ডায়াবেটিস সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তবে কিছু কিছু ভুলের কারণে হঠাৎ করেই বেড়ে যেতে পারে ডায়াবেটিস।

সাধারণত ডায়াবেটিস দু’ধরনের হয়ে থাকে- টাইপ ১ ডায়াবিটিস রোগটি ছোট বয়সে হয়। এক্ষেত্রে শরীরে তৈরি হয় না ইনসুলিন। অন্যদিকে বয়স বাড়লে দেখা দিতে পারে টাইপ ২ ডায়াবেটিস।

এ রোগে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি হয় না বা শরীর এই ইনসুলিন কাজে লাগাতে পারে না। ফলে রক্তে বাড়ে সুগার। টাইপ ১ এর তুলনায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যাই বেশি।

এই রোগে আক্রান্ত হলে অনেকের শরীরেই কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া, অতিরিক্ত তৃষ্ণা, দ্রুত ওজন কমা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয় বেশিরভাগের মধ্যেই।

তবে অনেকেই এসব উপসর্গগুলোকে মেনে চলেন না। তখন দেখা দেয় বড়সড় সমস্যা। এক্ষেত্রে সুগার যখন ধরা পড়ে তখন দেখা যায় রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে গেছে। তখন তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়ে পড়ে কঠিন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে হার্ট, কিডনি, চোখ সহ শরীরে নানা অঙ্গে পড়তে পারে ক্ষতিকর প্রভাব। তাই ডায়াবেটিস হলে ৫টি ভুল একেবারে করবেন না। জেনে নিন কোনগুলো-

​>> সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার খাওয়ায় নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা থাকে। এক্ষেত্রে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া নিষেধ। অনেকে তো ফল খাওয়াও বাদ দেন। তবে জানেন কি, যেসব ফলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, সে ধরনের ফল ডায়াবেটিস রোগীরা অনায়াসে খেতে পারেন।

তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুগার রোগীর দিনে অন্তত একটি ফল খাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে পেয়ারা, আপেল, লেবু ইত্যাদি ফল অনায়াসে খেতে পারেন। তবে বাজার থেকে কেনা ফলের জুস খাওয়া যাবে না।

​>> ডায়াবেটিস রোগের সঙ্গে দুশ্চিন্তার বড়সড় যোগ আছে। বিভিন্ন গবেষণা বলছে, বেশি দুশ্চিন্তা করলে রক্তে সুগারের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুগার থাকলে দুশ্চিন্তা যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। এজন্য নিয়মিত মেডিটেশন করুন।

​>> বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগীর খালি পেটে একেবারেই থাকা যাবে না। এক্ষেত্রে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে ও রক্তে বাড়ে সুগার। তাই অন্তত এক ঘণ্টা পরপর খেতে হবে। তবে তা যেন অল্প পরিমাণে হয়।

​>> ডায়াবেটিস রোগীকে অবশ্যই এক্সারসাইজ করতে হবে। ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরে থাকা ক্যালোরি ঠিক মতো খরচ হয়। এ ছাড়াও রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিকমতো নিয়ন্ত্রিত করতেও শরীরচর্চার জুড়ি মেলা বার।

এক্ষেত্রে রোজ আধা ঘণ্টা শরীরচর্চা করতে হবে। ঘাম ঝরিয়ে ব্যায়াম করুন। চাইলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে জিমে গিয়েও ব্যায়াম করতে পারেন।

​>> অনেক রোগীই চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলেন না। হয়তো ঠিক সময়ে ওষুধ খাওয়া হলো না, ঠিক সময়ে টেস্ট করা হয় না বা চিকিৎসকের কাছেই ফলোআপে যাওয়ার সময় নেই।

যদিও এমনটা করলে হতে পারে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই চলুন। আর এই ভুলগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।

News Desk

Recent Posts

ডিম ভাজা নাকি সেদ্ধ কোনটি বেশি উপকারী?

ডিম সেদ্ধ খেতে অনেকেই কমবেশি ভালবাসেন। তবে কারও কারও কাছে বেশি জনপ্রিয় ভাজা ডিম। ভেজে বা অমলেট বানিয়ে ডিম খেতেই…

21 hours ago

যে লক্ষণ দেখলে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করবেন

বর্তমানে ডায়াবেটিস প্রতিটি ঘরে ঘরেই দেখা দিচ্ছে। ছোট থেকে বুড়ো সবার শরীরেই বাসা বাঁধছে দীর্ঘমেয়াদী এই ব্যাধি। একবার ডায়াবেটিস ধরা…

22 hours ago

মুখের ভেতরে ঘা হয়েছে, ওরাল ক্যানসারের লক্ষণ নয় তো?

মুখের ভেতরে ঘা হওয়ার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। ভিটামিন স্বল্পতার কারণেই মাউথ আলসারের সমস্যা বেশি দেখা যায়। তবে এই সমস্যাকে…

1 day ago

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে যেভাবে সাহায্য করে মৌরি

সকালে উঠে মৌরি ভেজানো পানি পান করে অনেকেই দিন শুরু করেন। মূলত পেট পরিষ্কার করতে এর উপর ভরসা রাখেন অনেকে।…

2 days ago

এনার্জি পেতে চা-কফির পরিবর্তে অভ্যাস করুন ৬ জিনিসের

সকালে ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা বা কফিতে চুমুক না দিলে যেন শরীর ও মন চাঙ্গা হয়ে ওঠে না।…

2 days ago

গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় ও প্রতিরোধে কী করবেন?

শীত শেষে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে এরই মধ্যে। প্রায় সব ঘরেই দিন-রাতে চলছে ফ্যান বা এসি। ঋতু পরিবর্তনের এ সময়…

2 days ago