গর্ভবতী মায়েদের জন্য কিছু জরুরি তথ্য, না জানলে পস্তাবেন

গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরের নানা রকম পরিবর্তন দেখা যায়। এসময় নিজেকে ফিট রাখাটা অনেক নারীর জন্যই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। গর্ভাবস্থায় শরীর অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়া, অবসাদ, পিঠে ব্যথাসহ অনেক সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা।
এই সময় ভারসাম্যপূর্ণ ব্যায়াম হবু মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই উপকারী। সচেতনতা, সঠিক খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম আর মানসিক স্বস্তি গর্ভাবস্থায় খুবই জরুরি। এই সময় নিয়ম মেনে হালকা ব্যায়ামও বেশ উপকারী। তবে অবশ্যই তা চিকিৎসকের পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শারমিন মাহামুদ বলেন, এই সময়ে পিঠ ও কোমরে ব্যথাসহ নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। একটু শক্ত বিছানা ও সোজা হয়ে ঘুমাতে হবে। যারা বাইরে কাজ করেন, তাদের লম্বা সময় বসে থাকা ঠিক নয়। এতে কোমর ও পিঠে ব্যথা বেশি হয়। এই সময়ে হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে, বিশেষ করে নিশ্বাসের ব্যায়াম গর্ভকালীন উপকারী। তবে কোনো শারীরিক সমস্যা না থাকলেই এবং আপনার শরীরের উপর নির্ভর করেই ব্যায়াম করতে পারেন।

পার্শ্ব-জানুশিরাসন

প্রথমে সোজা হয়ে বসে এক পা (ডান পা) ভেতরের দিকে ভাঁজ করতে হবে। বাঁ পা সোজা রেখে বাঁ হাত দিয়ে ধরুন। এবার ডান হাত মাথার ওপর দিয়ে উঠিয়ে বাঁ পা ধরার চেষ্টা করুন। এই ব্যায়ামটি দুই দিকেই করা যায়। ব্যায়ামটি সর্বনিম্ন ১০ সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ ২৫ সেকেন্ড করা যাবে। তিনবারের বেশি করা যাবে না। গর্ভাবস্থার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মায়েরা এই ব্যায়াম করতে পারবেন। পিঠের ব্যথা কমানো, পেশিগুলো মজবুত করতে সাহায্য করবে এই ব্যায়াম।

ত্রিকোনাসন

প্রথমে দুই পা খুলে ডান পায়ের আঙুলগুলো ডান দিকে ঘুরিয়ে নিন। এবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ডান হাঁটু ভাঁজ করুন। এরপর ডান হাত দিয়ে ডান হাঁটু ধরুন ও বাঁ হাত ওপরের দিকে তুলে দিন এবং আপনার নজরও ওপরে হাতের দিকে রাখুন। এভাবে তিনবার সর্বনিম্ন ১০ সেকেন্ড ও সর্বোচ্চ ২৫ সেকেন্ড করতে পারবেন। এই ব্যায়াম করলে স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা থাকে। কারণ এই ব্যায়ামে জরায়ুর ব্যায়াম হয়, যা স্বাভাবিক প্রসবে সহায়ক। এছাড়া পায়ের পেশি, থাইয়ের ভেতরের দিকের অংশ, পিঠে ব্যথা, শিশুর হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী এই ব্যায়াম।

প্রাণায়াম

প্রথমে সুখ আসন করে বসুন। এবার নিশ্বাস নিতে নিতে দুই হাতের তালু মাথার ওপর একসঙ্গে করবেন। চোখ বন্ধ করে নাক দিয়ে লম্বা করে শ্বাস নেবেন ও ছাড়বেন। এভাবে তিনবার করে করতে পারেন। তবে ১০ সেকেন্ড থেকে ২৫ সেকেন্ডের বেশি নয়। মানসিক চাপ কমায় এবং মা ও শিশুর হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী এই ব্যায়ামটি। প্রথম দিকে কেউ না করতে পারলে দুই-তিন মাস থেকেও করা যাবে ব্যায়ামটি। আবার হাত উপরে না তুলেও করতে পারেন।

News Desk

Recent Posts

ঘরোয়া উপায়ে কোমরের ব্যথা সারাবেন যেভাবে

কোমরের ব্যথা বা ব্যাক পেইনের সমস্যায় বর্তমানে কমবেশি সবাই ভোগেন। বিশেষ করে কর্মজীবীদের মধ্যে যারা সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ…

34 mins ago

গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে ভাত নাকি রুটি খাবেন?

গরমে শরীর সুস্থ রাখতে হলে এমন খাবার খেতে হবে যা ঠান্ডা রাখতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ফল-সবজি ও পানীয় আছে যা…

1 hour ago

এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে

অসহ্য এই গরমে সবারই নাজেহাল অবস্থা। গরস সহ্য করতে না পেরে অনেকেই এখন কিনছেন এয়ার কন্ডিশনার বা এয়ার কুলার। তবে…

3 hours ago

পেট ভরে খাওয়ার ভুলে হতে পারে যেসব রোগ

অনেকেই খাবার খাওয়ার সময় অনেকটাই খেয়ে ফেলেন। তবে পেট ভরে খাবার খাওয়া কিন্তু শরীরের জন্য ভালো নয়। বিশেষ করে এই…

4 hours ago

ব্রেইন স্ট্রোকের প্রাথমিক ৭ লক্ষণ এড়িয়ে গেলেই বিপদ

শরীরের কোনো স্থানে ঠিকমতো রক্ত চলাচল করতে না পারলে ওই অংশের কোষগুলো প্রাণ হারাতে শুরু করে। মাথাতেও এই ঘটনা ঘটতে…

8 hours ago

প্রতিদিন আমলকি খেলে কী হয়?

স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে শুরু করে মুখের ব্রণের মতো সমস্যা দূর করে তাই একে উপকারিতার স্টোরহাউজ বলা হয়। বলছি আমলকির কথা।…

8 hours ago