সুস্থ থাকতে কতক্ষন ঘুমানো উচিত, দেখেনিন

সাধারণত ঘুম নিয়ে আমাদের বেশি ভাবতে হয় না। এটাকে জীবনের একটি স্বাভাবিক অঙ্গ বলেই আমরা মনে করি। ঘুম না এলে অবশ্য সমস্যা হয়। আসলে আমাদের সকলেরই কোনো না কোনো সময়ে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। একে বলে অনিদ্রা।

কখনো কখনো অল্প কদিন অনিদ্রা হয় যদি আমরা চিন্তিত বা উত্তেজিত থাকি। কয়েকদিন বাদে এটা কেটে গেলে আমরা আবার স্বাভাবিক ভাবে ঘুমোতে পারি। আমাদের শরীর এবং মন সুস্থ রাখতে ঘুমের প্রয়োজন। বেশিদিন ঠিকমত ঘুম না হলে আমরা তার ফল বুঝতে পারি।

চেতনার দুটি পরিপূরক মাত্রা হচ্ছে জাগৃতি ও ঘুম। একটি ছাড়া অন্যটি হয়ে দাঁড়ায় অর্থহীন বোঝা। একটি ছাড়া অন্যটিকে উপলব্ধি বা অনুভব করা অসম্ভব।

জাগৃতি ঘুমের মধ্যে যখন একটা সুন্দর ছন্দ থাকে, যদি আপনি ইচ্ছেমত ঘুমানো ও ইচ্ছেমত জাগতে পারেন, তখনই জাগৃতি ও ঘুমের আনন্দ আপনার পক্ষে পুরোপুরি অনুভব করা সম্ভব।

আর এ অনুভব থেকে আমরা বেশির ভাগই বঞ্চিত। যেমন কেউ ঘুমোতে চাচ্ছেন, কিন্তু ঘুমোতে পারছেন না। বিছায়নায় শুয়ে শুধু এপাশ-ওপাশ করছেন।

আবার কারও সমস্যা অতিরিক্ত ঘুম। জেগে উঠতে চাচ্ছেন, কিন্তু চোখ কিছুতেই মেলতে পারছেন না। বিছানায় একবার উঠে বসছেন আবার বালিশে মাথা এলিয়ে দিচ্ছেন।

ঠিকমত ঘুম থেকে জেগে উঠতে না পারার কারণে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনেকে। অনেকে আবার জাগৃতি ও ঘুমকে মিশিয়ে ফেলেন অর্থাৎ তারা জাগেনও না, ঘুমানও না, তারা অকারণে ঝিমান।

জাগৃতি ও ঘুমের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার উপর কিছুটা আলোকপাত পুরো বিষয়টি অনুধাবনে বিশেষ সহায়ক হবে। আমরা কেন জেগে থাকি, কেন ঘুমাই এ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় জুগান্তর সৃষ্টি করেন জার্মান বিজ্ঞানী হ্যান্স বার্জার ১৯২৯ সালে।

তিনি আবিষ্কার করেন যে, শক্তিশালী এমপ্লিফায়ার পাওয়া গেলে খুলির ওপর দিয়ে ব্রেনে প্রবাহিত বিদ্যুৎ তরঙ্গ মাপা যাবে। আমরা আজকে ইইজি (EEG= Electro Encephalo Gram) বলে যা জানি, তার সূত্রপাত ওখান থেকেই।

ব্রেনে ঘুম ও জাগৃতি কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় এ ব্যাপারে ইতালীয় বিজ্ঞানী গিয়াসিপ্পে মোরাজ্জি এবং ফরাসী বিজ্ঞানী মিশেল জোভেট গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেছেন।

তারা দেখিয়েছেন যে, মেডালা মিডব্রেনের মাঝখানে রয়েছে আমাদের ওয়েকিং সেন্টার বা জাগৃতি কেন্দ্র।

জাগৃতি কেন্দ্র যখন কাজ করে তখন আমরা জেগে থাকি। আর কেন্দ্রটি যখন কাজ বন্ধ করে দেয়, তখন আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। জাগৃতি কেন্দ্রের কাজ নিয়ন্ত্রিত হয় হরমোন সংকেত দ্বারা।

আর এই হরমোন নিঃসরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় শরীর মনের অবস্থা দ্বারা। শরীর মনের অবস্থা অনুসারে হরমোনের মাত্রা কমতে কমতে একটা নিদির্ষ্ট মাত্রায় এলে জাগৃতি কেন্দ্র কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি।

ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন কতটুকু ঘুম কোন বয়সের জন্য প্রয়োজন তার একটি তালিকা প্রণয়ন করেছে।

বয়স দৈনন্দিন ঘুমের চাহিদা

০-২ মাস দৈনিক ১২-১৮ ঘণ্টা ঘুম

৩-১১ মাস ১৫ ঘণ্টা

১-৩ বছর ১২-১৪ ঘণ্টা

৩-৫ বছর ১১-১৩ ঘণ্টা

৫-১০ বছর ১০-১১ ঘণ্টা

১০-১৭ ৫-৭ ঘণ্টা

পূর্ণ বয়স্ক ৭-৯ ঘণ্টা

News Desk

Recent Posts

গরমে কেন বাড়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি?

শুধু শীত নয়, গরমেও বাড়তে পারে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। বিশেষ করে আপনার যদি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ কোলেস্টেরল থাকে তাহলে…

1 hour ago

টয়লেটে মোবাইল ব্যবহার যে কারণে মারাত্মক

বর্তমানে মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছোট-বড় সবাই। শুধু মোবাইল বললে ভুল হবে, স্মার্টফোনের ব্যবহার এখন বিশ্বব্যাপী। সারাক্ষণই এতে ব্যস্ত হয়ে সময়…

2 hours ago

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে যে সবজি খাবেন

গরমে অতীষ্ট এখন জনজীবন। এ সময় শরীরের উপর বিরাট ধকল যাচ্ছে কমবেশি সবারই। তীব্র গরমে রোদে বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ…

3 hours ago

শরীরের যে স্থান পরিষ্কার না করলে বাড়বে রোগব্যাধি

শরীর পরিষ্কার রাখতে গোসল করা জরুরি। তবে জানলে অবাক হবেন, গোসল করলেও শরীরের কয়েকটি স্থান পরিষ্কার হয় না সহজে। আর…

5 hours ago

ওষুধ ছাড়াই কিডনির পাথর গলানোর ঘরোয়া উপায়

কিডনিতে পাথর জমার সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। যদিও এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্যগত সমস্যা, তবুও এটি কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে।…

6 hours ago

একনাগাড়ে হাঁচি হলে থামাবেন যেভাবে

হাঁচি তো কমবেশি সবাই দেন। সর্দি থেকে শুরু করে ধুলাবালি বা অ্যালার্জির কারণেই মূলত হাঁচি বেশি হয়। বিশেষ করে অ্যালার্জিতে…

9 hours ago