যে ছয়টি পুষ্টির ঘাটতি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক

পুষ্টির ঘাটতি বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান। এই ঘাটতিগুলো পূরণ না হলে গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং নির্দিষ্ট কিছু রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ আমাদের শরীরে সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিতে পারে। পুষ্টির ঘাটতি শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্থ করে।

মানবদেহে সবচেয়ে বেশি পুষ্টির ঘাটতি হয় প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি, সি, ডি, ক্যালসিয়াম, ফোলেট, আয়োডিন এবং আয়রনের অভাবে। তবে আশার কথা হলো সঠিক মাত্রায় পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে পুষ্টির ঘাটতিগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক পুষ্টির সাধারণ ঘাটতিগুলো এবং সেগুলো প্রতিরোধের উপায়।

১. প্রোটিন:
সাধারণত ছোট শিশুরা প্রোটিন বা অপুষ্টি ভোগে। তবে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে যারা অ্যানোরেক্সিয়া বা দীর্ঘ সময় ধরে উপবাস কিংবা অনাহারে থেকেছেন তারাও অপুষ্টিতে ভোগেন। বিভিন্ন বয়স অনুসারে সুষম খাদ্য গ্রহণ পুষ্টির এই ঘাটতিগুলো রোধে সহায়তা করতে পারে।
২.আয়রণ:
সাধারণত ভিটামিন এবং খনিজ গ্রহণের অভাবে আয়রণের ঘাটতি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আয়রণের অভার রক্তস্বল্পতা সৃষ্টির মূল কারণ। শিশু এবং গর্ভবতী মহিলা সবচেয়ে বেশি আয়রণের অভাবে ভোগে। ফলে কম ওজনের শিশু জন্ম, গর্ভবতী মহিলাদের অ্যানিমিয়া বা প্রসবকালে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৩. ভিটামিন এ:
ভিটামিন এ চর্বিযুক্ত দ্রবণীয় ভিটামিন। ভিটামিন এ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। ভিটামিন এ এর ঘাটতির ফলে অন্ধত্ব সৃষ্টি হতে পারে যা সংক্রামক হিসেবে জাতিগত ভাবে অন্ধত্বের ঝঁকিতে ফেলতে পারে।

৪. ভিটামিন ডি:
এটি একটি চর্বিযুক্ত দ্রবণীয় ভিটামিন। এই ভিটামিন দেহে স্টেরয়েড হরমোন জাতীয় ক্রিয়াকলাপ চালু এবং বন্ধ করতে পারে। ভিটামিন ডি ৩ হাড়ের খনিজ ঘনত্ব বজায় রাখে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম শোষণ করে রিকেটস, অস্টিওপোরোসিস এবং ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি হ্রাস করে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

৫. ভিটামিন বি ১২:
ভিটামিন বি ১২ বা কোবালামাইন একটি জল-দ্রবণীয় ভিটামিন। এটি মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র ঠিক রাখে। এই ভিটামিনের অভাবে মেগালব্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, এট্রোফিক গ্যাস্ট্রাইটিস এর মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ভিটামিন বি ১২ এর সংশ্লেষণ হ্রাস পেলে ক্রোনস ডিজিজ, সিলিয়াক ডিজিজ, ক্ষতিকারক ব্যাকটিরিয়া বৃদ্ধি পায়।

৬. আয়োডিনের ঘাটতি:
আয়োডিন থাইরয়েড হরমোন তৈরি, বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রণ করে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতা মানসিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।

শুধুমাত্র নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদান গ্রহণ নয় ফ্যাট ডায়েট অনুসরণ করাও পুষ্টির ঘাটতির অন্যতম প্রধান কারণ। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে কোন পুষ্টি গ্রহণ আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। পুষ্টির সমস্যা সমাধানে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

News Desk

Recent Posts

ক্যানসার হবে কি না জানতে পারবেন ৭ বছর আগেই

ক্যানসারের নাম শুনলেই কমবেশি সবাই আঁতকে ওঠেন। কঠিন এই ব্যাধি থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি। ক্যানসার রোগের আগাম খবর পেতে সারা…

6 hours ago

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

1 day ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

1 day ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

1 day ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

1 day ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

2 days ago