জেনেনিন আপনিও ,ওজন বাড়ানোর সঠিক নিয়ম সম্পর্কে

ওজন বাড়াতে চাই, কী করব? এমন প্রশ্ন অনেকেই করেন। আসলে ওজন বেড়ে গেলে যেমন কষ্ট, ঠিক ওজন কম থাকলেও অনেক কষ্ট। যাদের ওজন কম, তাদের নানা চেষ্টা থাকে কি করে ওজনটা বাড়ানো যায় সে বিষয়ে।

তাই বলে অনেক বেশি বেশি খেয়ে ওজন বাড়ানোই কি সমাধান? না, তা মোটেও নয়। ওজন কী কারণে কম তা প্রথমে জানা জরুরি।

বিভিন্ন কারণে মানুষের ওজন কম হতে পারে। মায়ের বুকের দুধ জন্মের পর না খাওয়া, সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে কমপ্লিমেন্টারি খাবার না খাওয়া, ব্লেন্ড করে খাওয়া, ঘরের খাবার না খেয়ে টিনজাত খাবার খাওয়া ইত্যাদি কারণে অনেক সময় দুই বা তিন বছর বয়সের পর অনেকের ওজন কমতে থাকে। আবার বংশগত কারণ, হরমোনজনিত কারণেও অনেকের ওজন কম থাকে। অনিয়মিত জীবন যাত্রার কারণেও ওজন কমে। যেমন, সময়মতো না খাওয়া, রাত জাগা, পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া ইত্যাদি কারণেও ওজন কম হতে পারে।

ওজন কম হলে শারীরিক ও মানসিক উভয় সমস্যাই হয়। মেজাজ খিটখিট, মাথা ব্যথা, দুর্বলতা, ক্লান্ত হওয়া, চুলপড়া, বুক ধড়ফড় করা ছাড়াও নানা রকম সমস্যা হতে পারে। ওজন বাড়লে যেমন মানুষের মন অনেক ছোট হয়, কষ্ট পায়, ঠিক তেমনি কম ওজনের কারণেও অনেকে নিজেকে আড়াল করে রাখে।

অনেকে ফাস্টফুড, মিষ্টি খেয়ে ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করে। এটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। রক্তের কিছু পরীক্ষা যেমন, হরমোন বিশেষ করে থাইরয়েড হরমোন, রক্তের হিমোগ্লোবিন, ব্লাড সুগার, লিপিড প্রোফাইল, লিভার ফাংশন ইত্যাদি দেখা খুব জরুরি। অনেক সময় ওজন বাড়াতে বেশি বেশি চর্বিযুক্ত খাবার খেলেন, এতে ওজন কিছু বাড়লেও রক্তের চর্বিও অনেক বেড়ে যেতে পারে।

আবার ওজন বাড়াতে অনেকে অনেক কার্বহাইড্রেট বা মিষ্টি খায়, কম প্রোটিন খায়। এতে রক্তের হিমগ্লোবিন কমে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যায়।

ওজন বাড়ানোর সঠিক নিয়ম হলো, কারণ বের করার পর সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া। জীবনযাত্রা যদি হয় কারণ, তবে ওজন বাড়াতে অবশ্যই সেটি পরির্বতন করতে হবে।

আপনার বর্তমান ওজনের সঙ্গে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ কিলোক্যালরি হিসাব করে ডায়েট শুরু করতে হবে। যেমন কারো ওজন যদি ৪৫ কেজি হয়, তবে ওজন বাড়াতে প্রথমে তাকে এক হাজার ৪০০ কিলোক্যালরির ডায়েট শুরু করতে হবে। দুই মাস পর ওজন বাড়ার ওপর ভিত্তি করে ধীরে ধীরে ক্যালোরি বাড়াতে হবে। ওজন কমাতে যেমন ধারাবাহিকভাবে নিয়ম মেনে কমাতে হয়, ঠিক তেমনি ওজন বাড়াতেও ধারাবাহিকতা মানতে হবে।

কে কত ওজন বাড়াবে, তা নির্ভর করে তার বিএমআই ও শারীরিক গঠনের ওপর। তাই এই কাজটি নিজে নিজে নয় বা ইন্টারনেট দেখে দুই হাজার বা দুই হাজার ৪০০ ক্যালোরির খাবার নয়, সুষম প্রোটিন বহুল ও কমপ্লেক্স কার্বহাইড্রেট যুক্ত খাবার বারে বারে খেতে হবে। এ ছাড়া ৩০ মিনিট হাঁটা এবং আট ঘণ্টা ঘুমানো- এই বিষয়গুলো মানলে আপনার ওজন সঠিক ও সুন্দরভাবে বাড়বে। আর সেই জন্য একজন বিশেষজ্ঞ বা ডায়েটিশিয়ানের কাছে যাওয়া জরুরি।

News Desk

Recent Posts

নেবুলাইজার কেন ব্যবহার করা হয়?

হাঁপানি, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ও অন্যান্য শ্বাসনালির সংক্রমণজনিত রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়। রোগী যখন ইনহেলারের…

6 hours ago

বারবার পানি পিপাসা লাগা কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো?

গরমে অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায়। ফলে বারবার পানি পিপাসা লাগা স্বাভাবিক। আর এ সময় প্রচুর পরিমাণ…

13 hours ago

মসলা চা পানে মিলবে যেসব উপকার

দিনে বেশ কয়েকবার চায়ের কাপে চুমুক না দিলে অনেকেরই দিন কাটে না। বিভিন্ন ধরনের চায়ের মধ্যে মসলা চায়ের স্বাদও যেমন…

13 hours ago

গরমে বাড়তে পারে কিডনির সমস্যা, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?

হঠাৎ করেই কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতার কারণে হঠাৎই বিকল হতে পারে কিডনি। মূলত তাপমাত্রা ও…

13 hours ago

খাবার কেনার আগে প্যাকেটের কোন লেখা অবশ্যই পড়বেন?

কর্মব্যস্ত জীবনে কমবেশি সবাই এখন রেডিমেড খাবারের উপর নির্ভরশীল। এ কারণে বেশিরভাগ খাবারই এখন প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়। প্রায়…

1 day ago

বিশ্বব্যাপী যে কারণে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব

গরমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে বাড়ে মৃতের সংখ্যাও। আজ ১৬ মে জাতীয় ডেঙ্গু দিবস। ডেঙ্গু…

1 day ago