March 29, 2024 | 12:17 AM

শীত কম-বেশি সকলেরই পছন্দের ঋতু, কিন্তু বাচ্চাদের কাছে শীতকাল দুঃস্বপ্নের সমান হতে পারে। কারণ শীতের সময় বাচ্চাদের মধ্যে জ্বর, সর্দি-কাশি কিংবা অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই এই সময় শিশুদের সর্বোচ্চ যত্ন নেওয়া উচিত এবং তাদের খাদ্যাভ্যাসের উপর নজর রাখা অপরিহার্য। শীতকালে আপনার বাচ্চাকে সর্বদা সুস্থ-সবল রাখতে তার খাদ্যতালিকায় রাখুন কিছু বিশেষ খাবার।

আসুন দেখে নেওয়া যাক, শীতকালে বাচ্চাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তাদের খাদ্যতালিকায় কোন কোন খাবার অন্তর্ভুক্ত করবেন –

>রসুন অ্যালিসিন সমৃদ্ধ। এটি এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শিশুদের সর্দি-কাশি, সাধারণ জ্বর এবং বিভিন্ন অসুস্থতা থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করে। তাই, শীতকালে শিশুদের খাদ্যতালিকায় পরিমাণমতো রসুন অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন। স্যুপ, তরকারি কিংবা ডালে রসুন দিতে পারেন।

>গাজরে বিটা-ক্যারোটিন থাকে, যা শীতকালে রক্তে শ্বেত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে। শ্বেত রক্তকণিকা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করতে এবং ভাইরাল সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে অত্যন্ত সহায়ক৷ তাছাড়া গাজরে উচ্চ ফাইবার থাকে, তাই এটি বাচ্চাদের পাচনতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রিত করতে সহায়তা করে।

>খেজুরে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো ভিটামিন ও খনিজ থাকে, যা ঠাণ্ডা দিনগুলিতে বাচ্চাদের উষ্ণ রাখতে সহায়তা করে। তাই বাচ্চাদের স্মুদি, মিল্কশেক, দুধ কিংবা ডেজার্টে, খেজুর অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করুন। তাছাড়া খেজুর শীতকালে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এতে অ্যান্টি-অক্সিডেটিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মেটাবলিজমকে উদ্দীপিত করে।

>মুসম্বি ও কমলালেবুর মতো ফল ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎস, যা ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি, শরীরকে সুস্থ রাখতেও সহায়তা করে।

>মিষ্টি আলু ফাইবার, ভিটামিন এ এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি শীতকালে বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারি। তাই বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় মিষ্টি আলু সিদ্ধ কিংবা মিষ্টি আলুর হালুয়ার মতো বিভিন্ন ধরনের রেসিপি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

>শীতকালে বাচ্চাদের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে তাদের খাদ্য তালিকায় রাখুন প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি। এগুলি ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফোলেট, ফাইবার এবং লুটেইন সমৃদ্ধ। যা বাচ্চাদের পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে। যেমন – পালং শাক ফাইবারে ভরপুর এবং বাচ্চাদের পাচনতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এটি স্যুপে বা ডালে যোগ করে খাওয়াতে পারেন।

>ডালিম বা বেদানা বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। এতে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে। তাছাড়া এই ডালিমের রস বাচ্চাদের অন্ত্রের কৃমি মারতেও অত্যন্ত সহায়ক।

>আমলকি ভিটামিন সি এর উৎস হওয়ায়, এটি বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এবং স্বাস্থ্য সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতেও দুর্দান্ত সহায়ক এটি। তাই বাচ্চাদের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই আমলকি অন্তর্ভুক্ত করুন। আপনার বাচ্চা যদি আমলকীর রস কিংবা কাঁচা আমলকীর টুকরো খেতে না পছন্দ করে, তবে ঘরে তৈরি শুকনো আমলকির টুকরো খাওয়ান।

>ডিম শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। এতে ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে, যা আপনার সন্তানের বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে। তাই শীতকালে আপনার বাচ্চার খাদ্যতালিকায় ডিম অন্তর্ভুক্ত করুন।