সাবধান! হঠাৎ করে আপনার কানে কিছু ঢুকলে তাৎক্ষণিক যা করবেন, জেনেনিন অবশ্যই

Written by News Desk

Published on:

মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে কান অন্যতম। কোনো কিছু শোনার জন্য অঙ্গটি আমাদের যেমন সাহায্য করে, তেমনই পরিপার্শ্বের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করতেও সহায়তা করে। তবে মাঝে মাঝে গোসল করতে গিয়ে জল ঢুকে যাওয়া কিংবা পোকামাকড় ঢুকে যায়।

অসাবধানতাবশত কিংবা কান চুলকাতে গিয়ে কাঠি ভেঙে কানের মধ্যে ঢুকে যাওয়া বেশ সাধারণ একটি ঘটনা। আবার পোকামাকড়, মশা-মাছি প্রভৃতিও কানের মধ্যে দুর্ঘটনাক্রমে ঢুকতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে।

এধরনের সমস্যায় পড়লে কখনোই কান খোঁচাখুঁচি করা যাবে না। এতে বিপদ আরো জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে ছোটো ছোটো কোনো জিনিস নিয়ে খেলার সময় নাক, কান বা মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়ার একটি সহজাত প্রবণতা রয়েছে। বড়দেরও অভ্যাস আছে কোনো কিছু (যেমন- কটনবাড, মুরগির পালক, ম্যাচের কাঠি ইত্যাদি) দিয়ে কারণে কিংবা অকারণে কান খোঁচানোর।

এতে খোঁচানোর সময় কাঠি ভেঙে বা কটনবাডের অংশ কানে রয়ে যেতে পারে। তাই এসব বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত। পাশাপাশি এরকম ঘটনায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেও ভুল করবেন না।

কানে কটনবাড বা তুলার অংশ, ম্যাচের কাঠি, পুঁতির দানা, বল বিয়ারিং, পেন্সিলের শিস, ছোটো রাবার, কাগজ কিংবা ফোমের টুকরা, বোতাম, পাথরের ছোটো কুচি, ছোটোখাটো খেলনার ছোটো ছোটো অংশ, পাখি বা মুরগির পালক, ফলের বীজ, শস্যদানা যেমন- ধান, চাল, ফলের বীজ, মুড়ি, চিঁড়া ইত্যাদি ঢুকলে চিকিৎসকের কাছে যেতে সামান্য দেরি হলেও অসুবিধা নেই।

তবে মশা-মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়া বা অন্য কোনো জীব কানে ঢুকে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে কানে ব্যথা ও অস্বস্তি হতেই থাকবে। কানে কোনো কিছু হঠাৎ ঢুকে গেলে ব্যথা ও অস্বস্তির পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তি কানে কম শুনতে পাওয়া, মাথা ভার-ভার অনুভূত হওয়া, বিরক্তি এমনকি মানসিক ভীতির মতো উপসর্গে ভুগতে পারেন। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত জিনিস দীর্ঘদিন কানের ভেতরে থাকলে বহিঃকর্ণ, টিম্প্যানিক মেমব্রেন কিংবা মধ্যকর্ণে প্রদাহ হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। এরকম ক্ষেত্রে কান থেকে পুঁজ পড়ে ও দুর্গন্ধ তৈরি হয়।

তবে তাৎক্ষণিক যা করবেন জেনে নিন-

কানের ভেতরে পোকামাকড় ঢুকলে তা বের হওয়ার জন্য ছটফট করে, কানের পর্দা কামড়ে ধরে ও হাঁটাচলা করে। কানে মশা-মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়া বা অন্য কোনো জীব ঢুকলে কানের ছিদ্রের সামনে উজ্জ্বল আলোর টর্চলাইট ধরুন। জীবন্ত পোকামাকড় আলোর প্রতি বেশ সংবেদনশীল। এজন্য দুর্ঘটনাবশত কানে ঢুকে যাওয়া ওইসব পোকামাকড় আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কান থেকে বের হয়ে আসতে পারে।

> কানে পোকা ঢুকলে অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেলের কয়েক ফোঁটা ধীরে ধীরে কানের মধ্যে দিতে পারেন। এতে ওই জীবন্ত পিঁপড়া বা পোকামাকড় কানের ভেতরেই মরে যাবে, ফলে ব্যথা বা অস্বস্তিও কমে যাবে। এরপর চিকিৎসকের কাছে যান।

কানে জড় পদার্থ ঢুকলে সেটিকে বের করার জন্য অহেতুক কোনো চেষ্টা না করে সরাসরি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কারণ বাসায় কানে খোঁচাখুঁচি কিংবা অপচিকিৎসার ফলে কানের পর্দায় ছিদ্র হয়ে যেতে পারে এবং এতে আক্রান্ত ব্যক্তি চূড়ান্তভাবে শ্রবণক্ষমতাও হারিয়ে ফেলতে পারেন।

মানসম্পন্ন কোম্পানির তৈরি শিশুদের খেলনার প্যাকেটের গায়ে বয়সসীমা দেয়া থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই এসব খেলনার প্যাকেটে আরো লেখা থাকে যে, খেলনাটিতে ছোটো যন্ত্রাংশ আছে এবং তা দুই-তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের ব্যবহারের জন্য নয়। বয়স্কদের উচিত শিশুদের এসব খেলনার ব্যাপারে সচেতন থাকা এবং খেলনা দিয়ে খেলার সময় শিশুকে নজরদারিতে রাখা। সেইসাথে অযথা যেকোনো কিছু দিয়ে কান খোঁচানো থেকেও বড়-ছোটো সবারই বিরত থাকা উচিত।

Related News