March 28, 2024 | 5:33 PM

দেশী-বিদেশি সব জাতের পেয়ারার মওসুম চলছে। তবে সারা বছরই থাই পেয়ারা পাওয়া যায়। পেয়ারা খায় না এমন লোক খুব কমই পাওয়া যাবে। এর পুষ্টিগুণ যে অনেক তা সবারই জানা। কিন্তু অনেকেই পেয়ারার শাঁসটুকু খেয়ে বীজ ফেলে দেন। তাতে আসল পুষ্টিই বাদ পড়ছে।

খাদ্য বিশেষজ্ঞরা পেয়ারা বীজসহ খাওয়ার কথা বলেন। পেয়ারা বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম। পেয়ারা স্বাস্থ্যকর চামড়া, শরীর ও চুলের জন্য ভীষণই উপকারী। বরাবরই পেয়ারা খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা।

পুষ্টিকর এই পেয়ারাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েডস, ফোলেট, পটাশিয়াম, আঁশ এবং ক্যালসিয়াম। একশ’ গ্রাম পেয়ারায় দুইশ’ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে অর্থাৎ পেয়ারায় কমলার চেয়ে ৪ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। পেয়ারার খোসায় রয়েছে কমলায় চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ভিটামিন সি।

এই ফলে লৌহ উপাদানও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান। পুষ্টিমানের বিবেচনায় কমলার মান যেখানে ১৮৬ পয়েন্ট সেক্ষেত্রে পেয়ারার পুষ্টি মূল্যমান ৪২১ পয়েন্ট। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধক।

১০০ গ্রাম পেয়ারায় আছে- জল ৮৬.১০ গ্রাম, শক্তি ৫১ কি.ক্যালোরী, প্রোটিন ০.৮২ গ্রাম, আঁশ ৫.৪ গ্রা. ফসফরাস ২৫ মি.গ্রা. সোডিয়াম ৩ মি.গ্রা. ভিটামিন এ ৭৯২ আই ইউ থাকে। তদুপরি পেয়ারাতে আছে ম্যাঙ্গানিজ, সেলিনিয়াম, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩ ইত্যাদি মূল্যবান খনিজ ও ভিটামিন।

রোগ প্রতিরোধে পেয়ারার অনেক গুণ রয়েছে। পেয়ারার বীজে ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ পলিআন-সেচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ও আঁশ বিদ্যমান। পেয়ারা পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং সংক্রমণ, প্রদাহ, ব্যথা জ্বর, বহুমূত্র, আমাশয় প্রভৃতি রোগে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

পুষ্টিকর এই সবুজ ফলটিকে ঘিরে ছোট ছোট নরম বীজের যে স্তর থাকে তাও কিন্তু সমান উপকারে আসে। অনেকেই অবশ্য বীজ পছন্দ করেন না এবং সাধারণত মসৃণ শাঁসটুকু খেয়ে বীজ ফেলে দেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, যে বীজ ফেলে দিচ্ছেন সেগুলোই পুষ্টির আকর! বীজ ফেলে দিয়ে কেন আপনি পুষ্টি থেকে পিছিয়ে থাকবেন?

কী আছে পেয়ারা বীজে? এবার তা দেখে নিন-

রক্তচাপ কমায়
উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে মোকাবিলা করা জন্য ডাক্তাররা অবশ্যই এই ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। পেয়ারা বীজে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম (কলার থেকে ৬০% বেশি) থাকে যা শরীরে রক্তের প্রবাহ এবং চাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে
পেয়ারাতে ফাইবার বেশি এবং কোলেস্টেরল শূন্য। এই ফলের বীজের সেরা গুণ হলো তা শরীরের কার্বোহাইড্রেটগুলো হ্রাস করে যা অতিরিক্ত ওজনের বৃদ্ধি ঘটায় না। ভিটামিন এবং খনিজের সঠিক মিশ্রণ দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখে।

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি
পেয়ারা বীজে ফাইবার বেশি থাকায় তা হজমের সহায়ক হয় ও পেট পরিষ্কার করে। বীজগুলো যদি সরাসরি গিলে খাওয়া যায় তবে অ্যাসিডিটির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিসের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে
পেয়ারা বীজে আছে প্রচুর প্রোটিন। এই বীজ চিনি এবং চিনি যৌগের একটি প্রধান অংশ ভাঙতে এবং মিষ্টি খাবার হজম করতে সাহায্য করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ বীজ শরীরের ইনসুলিন মাত্রা কমে যেতে বাধা দেয়। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দিলে পেয়ারা এবং এর বীজ একটি চমৎকার খাদ্য বিকল্প।