April 19, 2024 | 6:34 PM

এতদিন যাদের একটু বয়স বেশি, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল অথবা হৃদরোগের ঝুঁকি আছে তাদের ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হতো। ডাক্তার, ঘরের লোকজন, শুভাকাঙ্ক্ষী সবাই বলে থাকেন আপনার কোলেস্টেরল বেশি, উচ্চ রক্তচাপ আছে ডিম কম খাবেন। আর ডিমের লাল অংশ তো একেবারেই মানা। এমনকি ৭০ এর দশকেও আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন থেকে বলা হতো ডিম আহারে কোলেস্টেরল ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। কিন্তু এখন অনেকে ডিমের সাদা অংশের অমলেট আহার করেন।

বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, ক্লিনিক্যাল স্ট্যাডিতে প্রতীয়মান হয়েছে ডিম, চিংড়িমাছ এবং অন্যান্য এনিমেল ফুডে রক্তের কোলেস্টেরলের ওপর সামান্যই বা মার্জিত মাত্রায় প্রভাব রয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন এখন আর তাদের ডায়েটরি গাইডলাইনে ডিম খাওয়াকে নিরুৎসাহিত করছে না। বরং হার্ট এসোসিয়েশন বলছে, একজন পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষ দৈনিক ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারে। আর একটি ডিমে রয়েছে মাত্র ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল। এদিকে আমেরিকান ফেডারেল গভর্নমেন্ট আমেরিকানদের জন্য যে ডায়েটরি গাইডলাইন তৈরি করেছে তাতে বলা হয়েছে, প্রতিদিন যে কোনো ব্যক্তি একটি ডিমের সাদা অংশ আহার করলেও উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদরোগের ঝুঁকি থাকবে না।

এছাড়া জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল এসোসিয়েশন এবং ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৬টি ডিম আহারে হৃদরোগ, স্ট্রোক বা অন্যান্য ধরনের হৃদরোগের কোনো ঝুঁকি নেই। ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে বলা হয়, দিনে ১টি ডিম হার্টের জন্য ক্ষতিকর নয়। এ ব্যাপারে হারভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর পুষ্টি ও এপিডেমিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষণাদ্বয়ের অথার ড: ফ্রাংক হু উল্লেখ করেছেন, খাবার থেকে যে কোলেস্টেরল আসে অর্থাৎ ডায়েটরি কোলেস্টেরল তা কিছুটা ক্ষতিকর হলেও রক্তের কোলেস্টেরলে যে প্রোটিন, ভিটামিন বি ১২, রাইবোফ্লভিন, ফলেট ও ভিটামিন ডি রয়েছে, তা এসব কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ইফেক্টকে কমিয়ে দেয়। ড: হু আরো উল্লেখ করেন ডিম ক্ষতিকর প্রসেসড মিট বা প্রক্রিয়াজাত মাংসের ভালো বিকল্প হতে পারে। তিনি আরো উল্লেখ করেন সকালের নাস্তায় একটি ডিম কোলেস্টেরল প্রফাইলের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না যতটা প্রভাব ফেলে আপনার সকালের নাস্তায় এক বোল সুগারি সিরিয়াল জাতীয় খাবারে।