April 14, 2024 | 1:54 AM

ছোট এই অঙ্গটি অসুস্থ হলে পুরো শরীরই যে অচল হয়ে যায়। তাই এই অঙ্গটি ভালো রাখতে বা শক্তিশালী করতে আমাদের নাগালের মধ্যে এমন কিছু খাবার রয়েছে যা অত্যন্ত কার্যকরী।

এমন ১০টি খাবার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

বাদাম
বাদামের মধ্যে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, যা হার্টের জন্যে উপকারী। পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, সপ্তাহে পাঁচ বারের বেশি যারা বাদাম খান, তাদের করোনারি হৃদরোগে মৃত্যুর সম্ভাবনা ২৫ থেকে ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত কম। নিয়মিত বাদাম খেলে শরীরে উপকারী কোলেস্টেরল এইচডিএল-এর মাত্রা বাড়ে। সেই সঙ্গে বাদাম একটি লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমৃদ্ধ খাবার, যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। সব ধরনের বাদামই ভালো, তবে চীনাবাদাম সহজলভ্য বলে আপনি এটি প্রতিদিন খেতে পারেন।

কমলা
কমলায় আছে পেকটিন নামে একপ্রকার আঁশ যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। আরও আছে পটাসিয়াম, যা ব্লাড প্রেশার কমায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, হেসপিরিডিন নামের এন্টি-অক্সিডেন্টের উপস্থিতি থাকায় কমলার রস খেয়ে ব্লাড পেশার কমে গেছে।

সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছে আছে হার্টের জন্যে উপকারী ওমেগা-৩। রূপঁচাদা, কোরাল, রূপসা, লাক্ষা জাতীয় সামুদ্রিক মাছ বাংলাদেশে পাওয়া যায় সেগুলো খাওয়া যেতে পারে। বিদেশি সামুদ্রিক মাছের মধ্যে টুনা, স্যামন, সারডিন, ম্যাকারেল, হেরিং ইত্যাদি যদি সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে খেতে পারেন।

শিম
শিমে আছে সয়া প্রোটিন, যা রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড মাত্রাকে কমায়। আধাকাপ শিমে আছে নয় গ্রাম কোলেস্টেরল কমাবার উপযোগী আঁশ।

গাজর
গাজর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে যে ধরনের দ্রবণীয় আঁশ পাওয়া যায়, তা কোলেস্টেরল কমিয়ে থাকে।

রসুন
রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল হলো এলডিএল, রসুন এই এলডিএলের মাত্রা কমাতে দারুন উপকারী। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা রসুনকে অভিহিত করেছেন প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হিসেবে। এছাড়াও রসুন উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে গ্লুকোজের মান নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে এটি ঠাণ্ডাজনিত যে কোনো সমস্যা এবং ফ্লু প্রতিরোধ করে। হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা ও সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্যে প্রতিদিন রসুনের একটি কোষ খান।

টক দই
চিনি ছাড়া দই অর্থাৎ টক দই হৃৎপিণ্ডের পাশাপাশি পুরো শরীরের জন্যেই অত্যন্ত উপকারী। করোনারি হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন যারা, তাদের জন্যে টক দই বিশেষভাবে উপকারী। টক দই আপনার পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে এটি ত্বকের জন্যেও উপকারী। তাই প্রতিদিন এক কাপ টক দই খাবেন।

মিষ্টি আলু
আলু বেশি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে, সাধারণভাবে এমনটাই মনে করা হয়। কিন্তু মিষ্টি আলু এর ব্যতিক্রম। কারণ মিষ্টি আলু লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাবার। আর মিষ্টি আলুতে আছে দ্রবণীয় আঁশ, ভিটামিন এ এবং লাইসোপেন, যা হার্টের জন্যে উপকারী।

সয়াদুধ
সয়াদুধ বা সয়াপ্রোটিন প্রথম শ্রেণির উদ্ভিদজাত প্রোটিন। এটি গরুর দুধের বিকল্প এবং শতভাগ কোলেস্টেরল মুক্ত। হৃদরোগীরা গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে সয়াদুধ/সয়াপ্রোটিন ড্রিংকস প্রতিদিন ২৫০ মিলি খেতে পারেন। বাজার থেকে সয়াবিন কিনে নিয়ে আপনি নিজেই বাড়িতে বসে সয়াদুধ তৈরি করে নিতে পারেন।

স্পিরুলিনা
স্পিরুলিনা হলো অতিক্ষুদ্র আণুবীক্ষণিক নীলাভ সবুজ সামুদ্রিক শৈবাল, যা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ খাদ্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। জাতিসংঘ স্পিরুলিনাকে একবিংশ শতাব্দীর খাদ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। স্পিরুলিনাতে দুধের চেয়ে ২০ গুণ, ডিমের চেয়ে ছয় গুণ এবং মাছ ও মাংসের চেয়ে তিন গুণ প্রোটিন রয়েছে, যা সম্পূর্ণ কোলেস্টেরলমুক্ত। আরও এতে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন, মিনারেল, আয়রন, ফলিক এসিড ও এন্টি-অক্সিডেন্ট।