March 29, 2024 | 5:58 AM

শুধু পুরুষরাই নন বর্তমানে অনেক নারীরাও ধূমপানে আসক্ত। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে যখন সিগারেট খাওয়ার গড় প্রবণতা কমছে। তবে বিশ্বে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে নারী ধূমপায়ীর সংখ্যা। সিগারেট খাওয়ার প্রতিযোগিতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরই আছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নাম।

বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, করোনাকালে উদ্ভূত মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ সিগারেটের ব্যবহার বাড়িয়েছে, কেউ কেউ মহামারিতে ধূমপানও ছেড়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা করোনার শুরু থেকেই ধূমপায়ীদের সতর্ক করে আসছেন।

নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত ২০২০ সালের একটি গবেষণা অনুসারে, ধূমপায়ীদের আইসিইউতে ভর্তির সম্ভাবনা ধূমপায়ীদের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি। অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে অনেক সময় ব্যক্তি মারাও যায়।

নিকোটিন নারী-পুরুষ সবার শরীরের জন্যই ক্ষতিকর। চিকিৎসকেরা বলছেন, সর্বনাশা এ নেশায় আসক্ত হওয়ার প্রভাব পড়ে শরীরের ওপর। তবে নারীদের শরীরে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় প্রভাব ফেলে সিগারেট। জেনে নিন দীর্ঘদিন ধরে নারীরা ধূমপানে আসক্ত থাকলে শরীরে কী ঘটে-

ভ্রূণ এবং শিশুর উপর প্রভাব

মা যদি ধূমপায়ী হন তবে জন্মের সময় নবজাতকের সমস্যার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ধূমপানের কারণে ভ্রূণের ফুসফুস সঠিকভাবে বিকশিত হয় নাস গর্ভপাতের সম্ভাবনাও বেশি থাকে।

প্রি-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রোম (পিএমএস)

ধূমপান এবং তামাক নারীদের জন্য অনেক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে। ধূমপান নারীদের প্রি-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রোম লক্ষণগুলোর উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ী নারীদের পিরিয়ডের সময় ব্যথা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। অধূমপায়ী নারীদের তুলনায় ধূমপায়ী নারীদের মধ্যে এ সমস্যা ২-৩ দিন স্থায়ী হয়।

প্রজননে বাঁধা

ধূমপানের ফলে কিছু রাসায়নিক নারীর শরীরে প্রবেশ করে। যা খুবই বিপজ্জনক বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটি তাদের প্রজনন স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। এই রাসায়নিকগুলো ডিম্বস্ফোটনের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

এ ছাড়াও ডিম্বাণুতে ফ্যালোপিয়ান টিউবগুলোর মাধ্যমে জরায়ুতে চলাচলও হ্রাস করে। যার কারণে জরায়ুর বাইরে ভ্রূণের বিকাশ ঘটে। একে বলা হয় একটোপিক প্রেগন্যান্সি। এই ধরনের অবস্থা ভ্রূণের জন্য মারাত্মক প্রমাণিত হতে পারে।

ক্যানসারের ঝুঁকি

সিগারেটের প্যাকেটের গায়েও লেখা থাকে ‘ধুমপান ক্যান্সারের কারণ’। ফুসফুসের ক্যান্সার ধূমপানকারীদের মধ্যে খুব দ্রুত ঘটে। সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকা অনেক রাসায়নিক ক্যান্সারের জন্য দায়ী বলে জানা যায়।

নারীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারসহ জরায়ুমুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। পাশাপাশি মেনোপজের আগে ধূমপায়ী নারীদের পায়ুপথের ক্যান্সারের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধূমপান ত্যাগ করুন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো, ধূমপান বন্ধ করার পরবর্তী বছরগুলোতে জরায়ুমুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যায়। এ ছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।