শীতে অনেকেই ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু রোগে আক্রান্ত হন। এটি ভাইরাসজনিত রোগ। করোনাভাইরাসের মতো এ রোগেও শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ হয়। প্রতি বছর বিশ্বে ৩-৫ লাখ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশই এ রোগে আক্রান্ত হন।
মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, মাংসপেশীতে ব্যথা, হাঁচি, শুকনা কাশি, জ্বর, খাবারে অরুচি ও ঘ্রাণ নেওয়ার ক্ষমতা কমে আসাসহ এ রোগে আরও অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএস বলছে, সাধারণ সর্দি-কাশি ও জ্বর এবং ফ্লুয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। প্রথম পার্থক্য হলো ফ্লুয়ের যেসব উপসর্গ দেখা দেয় সেসব উপসর্গ কম সময়ের মধ্যে দেখা দেয়। অন্যদিকে সর্দি-কাশি ও জ্বরের ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ফ্লু এবং সর্দি-কাশি ও জ্বরের দ্বিতীয় পার্থক্য হলো ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ করে দূর্বলতা বা অবসাদ অনুভব করেন। যেটি সর্দি-কাশি ও জ্বরের ক্ষেত্রে হয় না।
ফ্লু থেকে বাঁচার উপায়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পরিমিত ঘুম ও বিশ্রাম শারীরিক দুর্বলতা ও অবসাদ থেকে সুরক্ষিত রাখে। একই সঙ্গে জ্বরের তীব্রতা ও শারীরিক ব্যথা কমানোর জন্য যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএসের ওয়েবসাইটে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফ্লু থেকে বাঁচার উপায়গুলো হলো-
ভ্যাকসিন দেওয়া
ফ্লু থেকে বাঁচার উপায় হলো ভ্যাকসিন দেওয়া। এতে ফ্লু হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। এ কারণে চিকিৎসকরা ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএস গত বছর করোনা ঝুঁকি কমানোর জন্য ৬৫ বছর বয়সের বেশি বয়সী ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, করোনা চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্তদের ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
ঠান্ডা থেকে দূরে রাখা
ফ্লুয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ঠান্ডা থেকে সবসময় দূরে রাখতে হবে। কেননা ঠান্ডা থেকে ফ্লু হয়। রোগীকে যথাসম্ভব গরম আবহাওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।
বেশি বেশি জল ও তরলজাতীয় খাবার খাওয়া
ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তির বেশি বেশি জল ও তরলজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বেশিরভাগ সময় এ রোগে আক্রান্তরা জল খান না। কিন্তু ফ্লু থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় বেশি বেশি জল খাওয়া।
রোগীর ব্যবহৃত প্লেট, গ্লাস বা অন্য জিনিসপত্র ব্যবহার না করা
ফ্লু হচ্ছে ছোঁয়াচে রোগ। তাই এতে আক্রান্ত ব্যক্তি ব্যবহৃত প্লেট, গ্লাস বা অন্য জিনিসপত্র ব্যবহার করা যাবে না। এমনকী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছে থাকার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন।