April 13, 2024 | 2:00 AM

প্রতিটি মানুষেরই হুলদ গুঁড়া দিয়ে বানানো চায়ের উপরকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, এক কাপ ফোটানো জলে পরিমাণ মতো হলুদ গুঁড়া, তার সঙ্গে মধু এবং অল্প করে আদা মিশিয়ে পান করলে শরীরে ভিটামিন সিসহ অন্যান্য ভিটামিনের প্রবেশ তো ঘটেই। সেই সঙ্গে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়ামসহ আরও নানাবিধ মিনারেলের ঘাটতি দূর হয়। ফলে শরীর এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় একাধিক রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে আরও একাধিক উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন-

ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হলুদ গুঁড়া দিয়ে বানানো চা পান করা শুরু করলে শরীরে কার্কিউমিন নামক উপাদানের প্রবেশ ঘটে, যা শরীর থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার পাশাপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দেহের ইতিউতি জমে থাকা মেদকে ঝরিয়ে ফলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই অল্প সময়ে যদি মেদ ঝরাতে চান, তাহলে রোজের ডায়েটে টার্মারিক টিকে জায়গা করে দিতে ভুলবেন না যেন!

দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে

চোখের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাস্তবিকই টার্মারিক টি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে হলুদের ভিতরে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে রেটিনার ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি চোখে প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গিয়ে যাতে অন্ধত্বের মতো ভয়ঙ্কর কিছু না ঘটে, সে দিকেও খেয়াল রাখে। তাই যারা দিনের মধ্যে ৮-৯ ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করুন, তাদের নিয়ম করে হলুদ গুঁড়া দিয়ে বানানো চা পান করা উচিত।

রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন রক্তে জমতে থাকা এল ডি এল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ফলে স্বাভাবিভাবেই হার্টের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। আসলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা যত কমতে শুরু করে, তত হার্টের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।

ক্যানসারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে, হলুদে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ, শরীরে যাতে ক্যানসার সেল জন্ম নিতে না পারে সে দিকে খেয়াল করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যানসার রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন হলুদ চা খাওয়া কতটা প্রয়োজন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে

নানাবিধ পুষ্টিকর উপাদানে সমৃদ্ধ হলুদ দিয়ে বানানো চা খেলে শরীরের ভিতরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে থাকে, যার প্রভাবে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রোগমুক্ত জীবন পাওয়ার স্বপ্ন একেবারে হাতের মুঠোয় চলে আসে।

স্কিন টোনের উন্নতি ঘটে

নিয়মিত হলুদ মেশানো চা খাওয়া শুরু করলে দেহের ভিতরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বাড়তে থাকে, যার প্রভাবে ত্বকের স্বাস্থ্যের এত মাত্রায় উন্নতি ঘটে যে ছোট-বড় সব ধরনের স্কিন ডিজিজের প্রকোপই কমতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, সোরিয়াসিস এবং একজিমার মতো মারাত্মক ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও এই বিশেষ পানীয়টি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।

হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে

হলুদে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান পাকস্থলিতে উপস্থিত উপকারি ব্যাকটেরিয়ার শক্তি বাড়িয়ে দেয়। ফলে হজন ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে বদ-হজম দূরে পালায়।

স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে

হলুদে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানদের শরীরে থেকে বের করে দেয়। ফলে ব্রেন সেল ড্যামেজের আশঙ্কা কমে। অন্যদিকে কার্কিউমিন মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে বুদ্ধির জোরও বাড়তে থাকে।

হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হলুদ দিয়ে বানানো চা খেলে হার্টে রক্ত সরবরাহকারি আর্টারিদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার বা হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। শুধু তাই নয়, স্ট্রোকের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমাতেও হলুদ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই হার্টকে যদি দীর্ঘদিন চাঙ্গা রাখতে চান, তাহলে হলুদ দিয়ে বানানো চা খাওয়া মাস্ট!

অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগকে দূরে রাখে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন নামক উপাদান ব্রেন সেলের যাতে কোনওভাবে ক্ষতি না হয়, সে দিকে নজর রাখে। তাই নিয়মিত হলুদ দিয়ে বানানো চা খাওয়া শুরু করলে ব্রেন পাওয়ার এতটা বৃদ্ধি পায় যে মস্তিষ্ক সম্পর্কিত কোনও রোগই ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। তাই যাদের পরিবারে এই ভয়ঙ্কর রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়মিত হলুদ চা খাওয়া শুরু করা উচিত। এবার নিশ্চয় বুজে গেছেন, সাধারণ চায়ের পরিবর্তে টার্মারিক টি খাওয়ার প্রয়োজন কতটা…!