March 28, 2024 | 10:09 AM

তেঁতুল বীজের মধ্যে যে অ্যান্টিবায়োটিকের শক্তি আছে, তা বিজ্ঞান আগেই জানিয়েছে। এবার তেঁতুল পাতায় ওষুধ-প্রতিরোধী জীবাণু ধ্বংসের উপাদান রয়েছে তা প্রকাশ করলো। ভারতের বেলগাছিয়ার রাজ্য প্রাণি ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় এমনই তথ্য মিলেছে।

ধীরে ধীরে ওষুধ-প্রতিরোধী হয়ে উঠছে অনেক ব্যাকটেরিয়া। সংক্রমণ ঠেকানো তাই চিকিৎসকদেরও বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিত্যনতুন ওষুধের খোঁজে সর্বত্র গবেষণা চলছে। সেই খোঁজে নেমেই গবেষকরা পেলেন তেঁতুল পাতার অ্যান্টিবায়োটিকের শক্তি যা দিয়ে ধ্বংস করা যায় মারাত্মক জীবাণু স্ট্যাফ-অরিয়াসকেও।

এই গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ছাপা হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নাল প্রকাশনা গোষ্ঠী ‘স্প্রিঞ্জার নেচার’ প্রকাশিত ‘বিএমসি কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড অল্টারনেটিভ মেডিসিন’ নামের বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি ও টক্সিকোলজি বিভাগের অধ্যাপক তাপস কুমার সরের তত্ত্বাবধানে এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন ১০ জন গবেষক এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জোয়ারদার।

গবেষকরা খরগোশের শরীরকে স্ট্যাফাইলোকক্কাস অরিয়াসে সংক্রমিত করে কৃত্রিমভাবে সেপটিক আর্থ্রাইটিসের জন্ম দেন এবং তার ওপর প্রয়োগ করেন ইথাইল অ্যালকোহলের সঙ্গে তেঁতুল পাতার মিশ্রণের নির্যাস।

গবেষক দলের প্রধান তাপস বলেন, খরগোশের ওজনের অনুপাতে ৫০০ ও ১০০০ মিলিগ্রাম প্রতি কিলোগ্রাম ওজন হিসেবে সেই নির্যাস দু’সপ্তাহ প্রয়োগ করে দেখা যায় সমূলে বিনাশ হয়েছে সংক্রমণ এবং কোন তাৎপর্যপূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।

প্রথাগত চিকিৎসায় অনেক রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা থাকে। কারও রক্তে লোহিত রক্তকণিকা তলানিতে চলে যায়। অনেকের রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা যেমন কমে যায়, আবার অনেকের অন্ত্রের মধ্যে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়াও মরে যায়। তাই গবেষকদের আশা, নতুন আবিষ্কার মানুষের উপর প্রয়োগ করলে এ রকম সমস্যার মুখোমুখি আর হতে হবে না।

এসএসকেএমের রিউম্যাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বদীপ ঘোষ বলেন, ওষুধ আবিষ্কারের এই সাফল্যের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কেননা সেপটিক আর্থ্রাইটিসের শিকার হয় প্রচুর মানুষ। তাদেরকে আমরা চিকিৎসা দিয়ে থাকি কিন্তু তাতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়ানো সম্ভব হয় না।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জানান, শুধু ওষুধ-প্রতিরোধী স্ট্যাফ-অরিয়াসের মতো জীবাণুই ধ্বংস করে না, সেই সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে পড়লেও সাফল্য মিলবে তেঁতুল পাতার অ্যালকোহলিক নির্যাস ব্যবহারে।