March 28, 2024 | 6:44 PM

নর-নারী মিলে বাধে সুখের সংসার। সুখের সেই সংসারে অনেক সময় দেখা দেয় দাম্পত্য কলহ। অনেক সময় দেখা যায় স্ত্রীর চাহিদা মেটাতে গিয়ে আপনাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। আর মধুর সেই সম্পর্ক ক্রমেই হতে পারে ক্লান্তিকর। চলে আসতে পারে আবেগহীন মনোভাব।

স্ত্রীর সঙ্গে থাকাকালে যদি মানসিক অস্বস্তিতে ভোগেন, ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত মনে হয়; তবে সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

এমনই একজন বিশেষজ্ঞ শার্লিন চং, যিনি ‘ক্লায়েন্ট’দের সাংসারিক জীবন তাদের মানসিক অবস্থার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে কিনা তা বিবেচনা করেন। সম্পর্কবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য জানিয়েছেন। সংসার ও সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক ধ্বংসের কবলে পড়ছে কিনা তা অনুধাবন করা বেশ কষ্টের।

তবে কিছু বিষয় রয়েছে, যা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল ধরেছে।

আসুন জেনে নিই এমনি কিছু বিষয়-

১. সঙ্গীর জন্য যদি আপনি মানসিক চাপ অনুভব করেন, তার সঙ্গে সময় কাটানোকে ক্লান্তিকর মনে হয়; তবে বুঝতে হবে আপনার সম্পর্কই আপনার মানসিক অবস্থাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।

২. মনোবিজ্ঞানী ডা. ট্রিসিয়া ওলানিন বলেন, সঙ্গীর চাহিদা পূরণ করাই যখন বড় হয়ে দাঁড়ায়, তখনই ওই মানুষটি মানসিক শক্তি হারাতে থাকে।

৩. ক্রমাগত মানসিক চাপ একসময় দুঃসহ হয়ে দাঁড়ায়। সমস্যা যার তার কোনো মাথাব্যথা নেই। ক্রমেই নিজের সমস্যাগুলো সরিয়ে রেখে সঙ্গীর সমস্যা নিয়েই সারাদিন মেতে থাকতে হয়।

৪. সঙ্গী যদি আপনাকে কটাক্ষ করে, নিয়ন্ত্রণ করে ও আপনার আবেগকে গুরুত্ব না দেয়, তবে একসময় সঙ্গীর প্রতি যে টান থেকে দূরে সরে যাবেন।

৫. যুক্তরাষ্ট্রের বিবাহ ও পরিবারবিষয়ক পরামর্শদাতা ক্যারোলিন ম্যাডেন বলেন, সঙ্গীর সঙ্গে কলহ আপনার জীবনীশক্তি কেড়ে নিতে থাকে। পাশাপাশি সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণ হারাতে থাকে মানসিক ও শারীরিক দুটোই।

৬. সম্পর্কে আবেগ ও বিশ্বাসের অভাব হলে তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে আপনার ওপর।

৭. সঙ্গীর সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যদি আপনি অস্বস্তি বোধ করেন, ব্যক্তিগত মতপ্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করেন, তবে খুবই খারাপ ইঙ্গিত।

৮. সত্য গোপন করা দীর্ঘমেয়াদের জন্য কখনই ভালো নয়। মিথ্যা হয়তো সাময়িক কলহ থেকে মুক্তি দেবে, তবে তা আপনাকে কুরে কুরে খাবে লম্বা সময় ধরে।

৯. এ সময় একা থাকার চিন্তা যদি প্রায়শই আপনার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে– আপনি সম্পর্ক থেকেই পালাতে চান। আর সম্পর্ক যদি মানসিকভাবে ক্লান্তিকর হয়, তবে তার প্রভাব পড়বে বন্ধুদের আড্ডায় আপনার আচরণের ওপরেও।

কীভাবে দাম্পত্য কলহ দূর করবেন

মতামতের পার্থক্য কমিয়ে আনা, দায়িত্ব পালন, পরনারী বা পরপুরুষে সম্পর্কে না জড়ানো, শারীরিক মানসিক নির্যাতন না করা এবং পার্টনারকে পর্যাপ্ত সময় দেয়া। প্রয়োজনে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে কাপল থেরাপি নিতে হবে। দুজনকেই সহযোগী হতে হবে।

ভালোবাসাহীন দাম্পত্য জীবনের চেয়ে একা থাকা ভালো। সম্পর্ককে বাগানের মতো পরিচর্চা করতে হবে। না করলে মানসিক রোগ হতে পারে। বিষণ্ণতা, অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা, ফোবিয়া, হিস্টিরিয়া, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি।