পানিশূন্যতায় ভুগছেন কি না বুঝে নিন ৫টি লক্ষণে?

Written by News Desk

Published on:

গরমে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সমস্যায় ছোট-বড় সবাই কমবেশি ভোগেন। তাই এ সময় পর্যাপ্ত পানি পান করার বিকল্প নেই। তবে ঘাম, প্রস্রাব, বমি বা ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর হয়ে পড়ে পানিশূন্য। যদি আপনি বারবার তৃষ্ণার্ত হন তাহলে বুঝতে হবে পানিশূন্যতায় ভুগছেন। এটিই হলো ডিহাইড্রেশনের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিহাইড্রেটেড হওয়ার মানে এই নয় যে আপনার শরীর পানি হারাচ্ছে, এর মানে আপনি ইলেক্ট্রোলাইট হারাচ্ছেন যেমন- লবণ ও পটাশিয়াম। যা আপনার শরীরকে শ্বাস নিতে, নড়াচড়া করতে, কথা বলতে ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সব কাজ করতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিসসহ বেশ কিছু স্বাস্থ্যগত সমস্যায় আক্রান্তরা ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বেশি থাকেন। আপনি যদি গরমে বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে খুব বেশি ঘামেন, বারবার প্রস্রাব করেন বা অতিরিক্ত বমি ও ডায়রিয়ায় ভোগেন তাহলে পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ করছেন কি না সেদিকে খেয়াল রাখুন। এনএইচএস এর তথ্য অনুসারে, খেলোয়াররা কিংবা বাইরে দীর্ঘক্ষণ যারা কাজ করেন তারা বেশি পানিশূন্যতায় ভোগেন। দ্য জার্নাল অব ফিজিওলজিতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত একটি ছোট গবেষণা অনুসারে, মধ্যবয়সী বা বয়স্ক পুরুষদের মধ্যেও ডিহাইড্রেশন থেকে জটিলতার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শরীরের মোট ওজনের ১০ শতাংশের বেশি তরল পদার্থ হারানো মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করে। ফলে খিঁচুনি, কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া বা হাইপোভোলেমিক শক ঘটতে পারে। ডিহাইড্রেশনের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- তৃষ্ণা, ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা কোষ্ঠকাঠিন্য। এর সঙ্গে আরও কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। জেনে নিন কী কী-

>> নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ ডিহাইড্রেশনের একটি সম্ভাব্য সতর্কতা চিহ্ন। মুখের লালার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে ডিহাইড্রেশনের কারণে পর্যাপ্ত লালা তৈরি হয় না।

হিউস্টনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জন হিগিন্স বলেন, ‘যদি আপনার মুখ পর্যাপ্ত লালা তৈরি না করে, তাহলে মুখে ব্যাকটেরিয়া বেশি বেড়ে যাবে। আর এ কারণেই মুখের দুর্গন্ধ বাড়বে।

>> শুষ্ক ও চামড়া ওঠা ত্বক ডিহাইড্রেশনের আরও একটি লক্ষণ হতে পারে। ডা. হিগিন্স বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন ডিহাইড্রেশনে ভুগলে তারা বেশি ঘামেন, আসলে বাস্তবতা হলো আপনি যখন ডিহাইড্রেশনের বিভিন্ন পর্যায়ে যান ত্বক খুব শুষ্ক হয়ে যায়। এমনকি ত্বক ফেটে চামড়াও উঠতে পারে।’

>> পেশিতে টান লাগার সমস্যাও দেখা দেয় পানিশূন্যতার লক্ষণ হিসেবে। ব্যায়াম করার সময় এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তবে গরমে পেশির ক্র্যাম্প বা টান বেশি ঘটে থাকে। ‘শরীর তরল হারালে ইলেক্ট্রোলাইটও কমতে শুরু করে। ফলে পেশিতে টান ধরার সমস্যা বাড়ে।’ তাই এই লক্ষণ দেখলে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন ডা. হিগিন্স।

>> জ্বর ডিহাইড্রেশনের সমস্যাকে আরও খারাপ করে তোলে। জ্বর যত বেশি হবে, আপনি তত বেশি পানিশূন্য হতে পারেন। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) পরামর্শ দেয়, পানিশূন্যতার কারণে জ্বর হলে দ্রুত শরীর ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করুন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

মায়ো ক্লিনিকের মতে, শিশুরা জ্বরে শরীরের তরল বেশি হারায়। ফলে তাদের গুরুতর ডায়রিয়া ও বমি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সিডিসি জ্বরে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের তাপমাত্রা ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার আহ্বান জানায়।

>> হঠাৎ করেই দৈনিক মাথাব্যথা হওয়ার লক্ষণও কিন্তু পানিশূন্যতার ইঙ্গিত দেয়। এমনকি হালকা ডিহাইড্রেশনও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। এমনকি মাইগ্রেনের ব্যথাও ট্রিগার করে পানিশূন্যতা। যদিও ডিহাইড্রেশন ছাড়াও বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। তাই মাথাব্যথা করলেই সতর্ক হয়ে যান ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

Related News