April 12, 2024 | 9:47 PM

এক একজন মানুষের অনুভূতি একেক রকম। রাগ, ক্ষোভ, আনন্দ, ভালোবাসা সবই কিন্তু অনুভুতির মধ্যে পড়ে। তবে এই অনুভূতি কম থাকা যেমন ভালো নয় তেমনি বেশি থাকাও ভালো নয়। তাই প্রত্যেকের উচিত অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করা। কিন্তু সেটা কীভাবে।

জিন সিন জিউতসু, তেমনি একটি পুরোনো পদ্ধতি যা অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে। এটি এক ধরনের ব্যায়াম। মূলত হাতের ব্যায়াম। এটি সমস্ত শরীরের শক্তিকে একটি কেন্দ্রে নিয়ে আসে এবং দুশ্চিন্তাকে দূরে ঠেলে দেয়। এই ব্যায়ামের মাধ্যমে মানুষের শক্তিগুলো শারীরিক, মানসিক এবং আত্মিক ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।জিন সিন অনেক পুরনো এবং খুবই সাধারণ একটি পদ্ধতি। এর মূল কথা হলো, হাতের প্রত্যেকটি আঙ্গুল একেকটি অঙ্গের সঙ্গে জড়িত। আর এই আঙ্গুলের মাধ্যমে মানুষের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

বৃদ্ধা আঙ্গুলঃ বৃদ্ধা আঙ্গুল মূলত সমস্ত শরীরের সঙ্গে সংগতি রেখে চিন্তা এবং ত্বকের উপরিভাগের চালনা করে। এর সঙ্গে জড়িত অঙ্গ হলো পাকস্থলী। বৃদ্ধা আঙ্গুল পাকস্থলীর প্লীহা, মাথাব্যথা, স্নায়ুবিক দূর্বল অবস্থা, দুশ্চিন্তা এবং ত্বকের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে।

তর্জনী আঙ্গুলঃ তর্জনী আঙ্গুল মূলত ভয়ের সঙ্গে জড়িত। এটি মাংসপেশির গঠনতন্ত্র চালনা করে। এটি কিডনি এবং মূত্রথলীর সঙ্গে সংযুক্ত। এটি হজম প্রক্রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, আরথাইটিস, দাঁতের সমস্যা এবং কোনো প্রকার নেশাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

মধ্যমা আঙ্গুলঃ মধ্যমা আঙ্গুল মূলত রাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এটি রক্তকে চালনা করে। মধ্যমা আঙ্গুল যকৃতের সঙ্গে সংযুক্ত। এটি রক্ত চলাচল, ক্লান্তি, মাইগ্রেন, দৃষ্টি শক্তি, দ্বিধা এবং মাথার সামনের অংশের ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

অনামিকা আঙ্গুলঃ অনামিকা আঙ্গুল দুঃখের সঙ্গে জড়িত এবং ত্বকের গভীর অংশগুলো চালনা করে। এটি ফুসফুসের সঙ্গে সংযুক্ত। এটি হজম, ত্বকের গভীর অংশ এবং জ্ঞানবোধ নিয়ন্ত্রণ করে।

কনিষ্ঠা আঙ্গুলঃ কনিষ্ঠা আঙ্গুল প্রচেষ্টা মূলক অনুভূতি এবং হার্ট ও দেহের কঙ্কাল গঠনের সঙ্গে সংযুক্ত। এটি হাড়ের সমস্যা, নালী, রক্তের চাপ, হার্টের অবস্থা, উদ্বেগ, বিচারমূলক আচরণ এবং আত্মসম্মান মূলক ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।

এটা বিশ্বাস করা হয় যে, যখন এই পাঁচটি আঙ্গুলের মাধ্যমে মুষ্টিবদ্ধ করা হয় তখন এই সবগুলো অনুভূতি এক হয়ে যায়। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ মুষ্টিবদ্ধ করে রাখলে এই অনুভূতিগুলো নিয়ন্ত্রিত হতে শুরু করে। এটি রক্তের পালসকে কমিয়ে আনে। চিন্তা শক্তিকে ধীর গতিসম্পন্ন করে তোলে। মস্তিষ্ক তখন সব কিছু ভালো ভাবে পুণরায় চিন্তা করতে থাকে।

এছাড়া এই মুষ্টিবদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে আপনি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। প্রত্যেকবার মুষ্টিবদ্ধের সঙ্গে শ্বাস নিন এবং মুষ্টি খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাস ত্যাগ করুন। এই পদ্ধতিকেই বলে জিন সিন।

বিশেষ করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে প্রতিদিন একবার হলেও এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন, দেখবেন ভালো ফলাফল পাবেন।