March 29, 2024 | 3:20 AM

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করার বিকল্প নেই। সঠিক ডায়েট এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে অতিরিক্ত ওজন দ্রুত কমানো যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ৩০০ মিনিট শরীরচর্চা করা আবশ্যকীয়।

তবে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে নানা ধরনের ব্যায়াম করে থাকেন। এতে হীতে বিপরীত হয়ে থাকে। কারণ না বুঝে ব্যায়াম করলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা পেতে পারেন। যা একসময় মারাত্মক আকারও ধারণ করতে পারে। তাই ওজন কমানোর আগে জানা উচিত কোন ব্যায়ামগুলো দ্রুত ওজন কমাবে? তেমনই ১০টি ব্যায়াম সম্পর্কে জেনে নিন, যা অতিরিক্ত ওজন কমাবে দ্রুত।

হাঁটা: হাঁটলে শরীর নানাভাবে উপকৃত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা করে হাঁটার অভ্যাস গড়তে হবে। এতে প্রায় ১৫০ ক্যালোরি পর্যন্ত বার্ন হতে পারে। এ ছাড়াও হাঁটা অনেকটাই নিরাপদ। চাইলে সকাল-বিকেল নিয়ম করে হাঁটতে পারেন। এতে দ্রুত ওজন কমবে।

দড়ি লাফ: অনেকেই কর্মব্যস্ততার কারণে নিয়মিত হাঁটার সময় বা সুযোগ পান না। তাদের জন্য দড়ি লাভ হতে পারে সেরা উপায়। দড়ি লাফের মাধ্যমে দ্রুত ক্যালোরি বার্ন করা যায়। গবেষণা বলছে, ১০ মিনিট হাঁটার চেয়ে দৈনিক ১০ মিনিট দড়ি লাফ দিলে বেশি ক্যালোরি বার্ন করা যায়। এতে পেশিও শক্তিশালী হয়।

হিট: হাই ইনটেনসেটি ইন্টারভাল ট্রেইনিং যাকে হিট বলা হয়। এটি এক ধরনের ব্যায়াম। ওজন কমানোর দুর্দান্ত উপায় হলো উচ্চতর ব্যায়ামের এই প্রশিক্ষণ। হিট ওয়ার্কআউট করার সময় শরীর কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে ফ্যাট থেকে শক্তি ব্যবহার করে। এই ওয়ার্কআউটের মাধ্যমে অনেক ক্যালোরি বার্ন করা যায়। প্রতিদিন হিট এক্সারসাইজ করলে আপনার শরীর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ফ্যাট-বার্নিং মোডে রাখবে।

শক্তি প্রশিক্ষণ: ওয়েট ট্রেনিং বা ওয়েট লিফ্টিংয়ের মাধ্যমেও অতিরিক্ত ওজন কমানো যায়। আবার পেশি গঠনেও এই ওয়ার্কআউট অনেক কার্যকরী। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে ওয়েট ট্রেনিং। প্রতিদিন এক ঘণ্টার জন্য সপ্তাহে ৩-৫ বার ওয়েট ট্রেনিং করুন। ওয়েট ট্রেনিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে ২ দিন অন্তর একদিন করে বিরতি নিতে হবে।

সাঁতার: ওজন কমানোর সেরা ব্যায়ামগুলোর মধ্যে সাতাঁর অন্যতম। যাদের হাঁটু বা পিঠে ব্যথা থাকে; বিশেষ করে তাদের জন্য খুবই উপকারী এই অনুশীলনটি। সাঁতারের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টগুলো আরও শক্তিশালী হয়। এটি কার্ডিও ওয়ার্কআউট হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ৩-৪ দিন অন্তত আধা ঘণ্টার জন্য সাঁতার কাটলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, টাইপ-২ ডায়াবেটিসসহ ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। এ ছাড়াও এটি খারাপ কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ কমায়।

সাইক্লিং: ওজন কমানোর আরও একটি দুর্দান্ত উপায় হলো সাইক্লিং। প্রতিদিন এক ঘণ্টা সাইক্লিং করলে ৪০০-৭৫০ ক্যালোরি পর্যন্ত বার্ন হয়।

পাইলেটস: বলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অনেকেই পাইলেটস করে শরীর ফিট রাখেন। গবেষণা বলেছে, পাইলেটস আপনাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

জগিং: হাঁটার পাশাপাশি জগিং একটি বায়বীয় অনুশীলন। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে পারে জগিং। পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়তা করে। প্রতিদিন জগিং করলে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত আপনার বিপাক হার বাড়বে।

ইয়োগা: যোগব্যায়াম বা ইয়োগার মাধ্যমেও শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব। এটি এমন একটি অনুশীলন যাতে অন্তর্ভুক্ত আছে শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং ধ্যান। গবেষণা বলছে, যোগব্যায়ামের মাধ্যমে কাজে আরও মনোযোগী হওয়া যায়। পাশাপাশি ক্ষুধাও কমতে শুরু করে এই ব্যায়ামের মাধ্যমে।

সিঁড়ি আরোহণ: অনেকের ঘরেই বিভিন্ন শরীরচর্চার সরঞ্জাম না থাকায় ব্যায়াম করতে পারেন না। তারা সিঁড়িতে ওঠানামা করার মাধ্যমেও ওজন কমাতে পারবেন। এ ছাড়াও সিঁড়িতে ওঠানামা করলে রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে। সেইসঙ্গে জয়েন্ট, পেশি এবং হাড়কে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।