April 13, 2024 | 11:34 PM

নিজেকে ভালো রাখার প্রচেষ্টা আমাদের নিরন্তর। আর তারই অংশ হিসেবে চলে নানা কাজে ব্যস্ত থাকা। এই ব্যস্ত থাকতে গিয়ে আবার নিজের দিকে ঠিকভাবে খেয়াল রাখতে পারি না। এ যেন এক ‍দুষ্টচক্রে আটকা পড়ে গেছি আমরা। যে ভালো থাকার জন্য এত প্রচেষ্টা, দিনশেষে সেটিই যেন অধরা থেকে যায়।

সারাদিনের ব্যস্ততার পরে যখন ঘরে ফেরা হয়, ক্লান্ত শরীর বিছানায় এলিয়ে দিয়েই যেন শান্তি। শরীর ভালো রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন, সেই খাবারও ঠিকমতো পায় না আমাদের শরীর। বাইরের অপুষ্টিকর খাবার তো আছেই, সেইসঙ্গে চলে খাবারে অনিয়ম। এদিকে শরীরচর্চা দূরে থাক, আধা কিলোমিটার হাঁটার বদলেও রিকশা নিয়ে চলতে পছন্দ করি আমরা। আর এসবের প্রভাব পড়ে শরীরে। শরীর তো খারাপ হয়ই, বয়সের আগেই যেন বেড়ে যায় বয়স।

এতসবকিছুর মধ্যেও দেখবেন, কারও কারও বয়স বাড়লেও তা একদমই বোঝা যায় না। এর কারণ কী? তারা সম্ভবত আপনার থেকে আলাদা। তারা শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজের দিকে খেয়াল রাখেন। মেনে চলেন এমনকিছু নিয়ম, যেগুলো বয়স ধরে রাখতে কাজ করে। আপনি যদি সেসব নিয়ম মেনে চলেন তবে আপনার বয়সও বাড়বে না। অর্থাৎ মুখে পড়বে না বয়সের ছাপ। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

পর্যাপ্ত জল পান করুন

জল পান আমাদের সুস্থ থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় একটি অভ্যাস, এটি আমরা সবাই জানি। কিন্তু এই সাধারণ অভ্যাসের দিকেই নজর থাকে না আমাদের। কাজের চাপে এতটাই মশগুল থাকি যে, সামনে রাখা জল বোতল থেকে জলটুকু খেতেও ভুলে যাই। আর শীতের দিন হলে তো কথাই নেই। তৃষ্ণা কম পায় বলে জলও কম খাওয়া হয়। এদিকে এই অভ্যাসের প্রভাব পড়ে শরীরে। শরীরের ভেতর থেকে আর্দ্রতা কমে গিয়ে আপনাকে দেখতে বয়স্ক দেখায়। তাই বয়স ধরে রাখতে চাইলে দিনে অন্তত দুই লিটার জল পান করুন।

শরীরচর্চা করুন

শরীরচর্চা মানে যে আপনাকে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে হবে, এমন নয়। আপনি বাড়িতে থেকেও কিছুটা সময় রাখতে পারেন শরীরচর্চার জন্য। অলসতা ঝেড়ে ফেলুন। সকালে আরামে না ঘুমিয়ে সেই সময়টা হেঁটে আসুন। প্রতিদিন অন্তত ত্রিশ মিনিট রাখুন শরীরচর্চার জন্য। বয়স ধরে রাখতে এই অভ্যাসের তুলনা নেই। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারলে।

প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম

সুস্থ থাকার জন্য অন্যতম জরুরি অভ্যাস হলো পর্যাপ্ত ঘুম। আমাদের শরীরের সব ধরনের ঠনক্রিয়া ঘুমের মধ্যে হয়ে থাকে। এসময় শরীর নিজেকে পরেরদিনের পরিশ্রমের জন্য উপযুক্ত করে তোলে। তাই ঘুম যেন ভালো হয় সেদিকে খেয়াল রাখতেই হবে। প্রতি রাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। ঘুমের জন্য এমন কোনো ঘর নির্বাচন করুন যেটি নিরিবিলি। এতে ঘুম নির্বিঘ্ন হবে। ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে সব ধরনের গ্যাজেট বা ইলেক্ট্রিক ডিভাইস ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম হলে আপনি থাকবেন সতেজ। সেইসঙ্গে বয়সের ছাপও পড়বে না চেহারায়।

দূরে রাখুন দুশ্চিন্তা

দুশিন্তা দেখা যায় না কিন্তু এটি আপনাকে ভেতর থেকে শেষ করে দিতে পারে। এটি শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। দুশ্চিন্তার কারণে আপনাকে অল্প বয়সেই বয়স্ক দেখাতে পারে। তাই সব ধরনের দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকুন। হাসিখুশি থাকুন। কোনো বিষয় নিয়ে খুব বেশি ভাববেন না। ধর্মীয় প্রার্থনা, ধ্যান এসব অভ্যাস আপনার মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করবে।

পুষ্টিকর খাবার খান

খাবার যখন খেতেই হবে, এমন খাবার খান যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। খাবারের মাধ্যমেই আমাদের শরীর শক্তি সঞ্চয় করে। আবার এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো আমাদের শরীরে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সেসব খাবার বাদ দিতে হবে। খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। মৌসুমী সবজি, ফলমূল খেতে হবে। সেইসঙ্গে মাছ, মাংস, ডিম, দুধও খেতে হবে নিয়মিত। আস্ত শস্য জাতীয় খাবার পাতে রাখবেন। অতিরিক্ত তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলবেন। বাইরের খাবার যতটা সম্ভব বাদ দেবেন। শরীর ভেতর থেকে সুস্থ থাকলে বয়সের ছাপ পড়বে না চেহারায়।