March 29, 2024 | 5:32 AM

গরমকাল হোক বা শীত, খাবার গরম করে খেতেই ভাল লাগে। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে সবসময় তাজা রান্না করে খাওয়ার সময় থাকে না। তাই একবার অনেক রান্না করে তা দিয়েই দুই-তিন বেলা গরম করে খাওয়ার প্রবণতা থাকে অনেকেরই।

আবার কাজের কারণে যদি একাই বাড়িতে থাকতে হয় তবে প্রতিবেলায় রান্না করতে চান অনেকেই। বাইরের খাবারই তাদের ভরসা। কারণ খাওয়ার আগে তা কেবল গরম করে নিলেই হয়।

খাবার গরমের ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভও অনেকে ব্যবহার করেন। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, কিছু কিছু খাবারের ক্ষেত্রে এই অভ্যাস মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। জার্নাল অব এগ্রিকালচারকাল ফুড অ্যান্ড কেমিস্ট্রি-র একটি প্রতিবেদনে গবেষকরা এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে সচেতন করেছেন।

মাইক্রোওয়েভে গরম করা খাবারে ভিটামিন বি১২ তার কার্যকরিতা হারায়। এক এক বার খাবার গরম করলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভিটামিন বি১২ নষ্ট হয় খাবারের।

তাছাড়া বেশ কিছু খাবার মাইক্রোওয়েভে গরম করলে সেই খাবারের খাদ্যগুণ নষ্ট হয় ব্যাপক ভাবে। কোন খাবারগুলো মাইক্রোওয়েভে গরম করা উচিত নয় বলে গবেষকরা বলেন জানেন কি?

একসঙ্গে দুই বেলার ভাত রান্না করে ওভেনে গরম করার পর যদি ঘরোয়া তাপমাত্রাতেই রেখে দেয়া হয় তা হলে ভাত যত ঠাণ্ডা হতে থাকে তত নানা ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে থাকে। সেই ঠাণ্ডা হওয়া ভাত যদি আবার ওভেনে গরম করা হয় তবে ব্যাকটেরিয়াগুলোর ক্ষতিকারক প্রভাব আরো বৃদ্ধি পায়।

ডিমের ঝোল, ডিমের কারি, ডিম সেদ্ধ বা অমলেট কোনোটাই গরম করে খাওয়া ভাল নয়। কারণ ডিম দ্বিতীয় বার গরম করলে তার প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায় এবং ডিমের মধ্যেই নানা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এই ব্যাকটেরিয়া পেটে গেলে শরীর খারাপ করে।

চিকেন বা মুরগির মাংসেও প্রোটিনের মাত্রা যথেষ্ট থাকে। তাই দ্বিতীয় বার গরম করলে প্রোটিনের অণুগুলো ভেঙে যায়। তাছাড়া অনেক সময় রান্নার পরেও এক ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটিরিয়া চিকেনের অংশ বিশেষে থেকে যায়। অল্প অংশে থাকে বলে এগুলো খুব একটা পেটের অসুখের কারণ হয় না। কিন্তু রান্না করা চিকেন যদি মাইক্রোওয়েভে গরম করা হয় তা হলে এই ব্যাকটেরিয়া মাংসের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া পেটের অসুখ বাড়াতে পারে।

যেকোনো ধরনের শাকও দ্বিতীয় বার গরম করা উচিত নয়। শাকে নাইট্রেট থাকে। রান্না করা শাকের তরকারি পুনরায় গরম করা হলে ওই নাইট্রেট থেকে নাইট্রোস্যামাইন নামের এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয় যা শরীরের ক্ষতি করে।

রান্না করা বা সেদ্ধ করা আলু ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিলে তাতে ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয়। সেই ব্যাকটেরিয়া অতটা ক্ষতিকর নয়, কিন্তু আবার গরম করার সময় তা ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে।