March 29, 2024 | 7:24 PM

প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা নিজের ক্ষমতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যায়াম করে থাকেন। কিন্তু বড়দের মতোই বাচ্চাদেরও যে ব্যায়াম করা জরুরি, তা নিয়ে অভিভাবকরা বিশেষ চিন্তাভাবনা করেন না। প্রথম বয়স থেকে ব্যায়ামের অভ্যাস থাকলে ভবিষ্যতেও এর ফলে লাভ হবে এবং সন্তান সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে শুধু শারীরিক বিকাশই হয় না, বরং এর পাশাপাশি তাদের আত্মবিশ্বাস, একাগ্রতাও বৃদ্ধি পায়। এমনকি নতুন কিছু শেখার ইচ্ছাও জাগ্রত হয় তাদের মধ্যে।

কোন ধরনের ব্যায়াম করা উচিত বাচ্চাদের?

বিশেষজ্ঞদের মতে, জিম বা কঠিন ব্যায়াম বাচ্চাদের করা উচিত নয়। খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করা, সাঁতার কাটা, ডান্স, জুডো-ক্যারাটে ইত্যাদিতে বাচ্চাদের ভর্তি করা উচিত। প্রতিদিন ১ ঘণ্টা বাচ্চাদের খেলাধুলা করতে দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

ব্যায়ামের ফলে বাচ্চাদের কী লাভ হতে পারে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাচ্চারা কোনও অ্যাক্টিভিটিতে অংশগ্রহণ করলে তাদের মধ্যে ধৈর্য শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই তাদের এমন কোনও ব্যায়াম বা অ্যাক্টিভিটিতে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করা উচিত, যা তাদের ধৈর্য বাড়াতে পারে। এই অভ্যাস তাদের জীবনকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারে।

ব্যায়াম শরীরকে নমনীয় করতে সাহায্য করে। কারণ ব্যায়াম বা খেলাধুলার সময় শরীরের মাংসপেশী স্ট্রেচ হয়। বাচ্চাদের শরীরকে নমনীয় করার জন্য জিমন্যাস্টিক, স্ট্রেচিং ও যোগাসন সেশানে অংশগ্রহণ করতে উদ্দীপিত করুন। এর ফলে তাদের লাভ হবে।

কোনও ব্যায়াম বা অ্যাক্টিভিটিতে অংশগ্রহণ করলে বাচ্চাদের মাংসপেশী মজবুত হয়, পাশাপাশি তাদের শক্তিও বাড়ে। ব্যায়াম করলে হাড় ও মাংসপেশীকে বিকশিত করে। যা ক্রমশ বাচ্চাদের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং তারা বয়স অনুযায়ী ভারী জিনিস তোলার শক্তি অর্জন করতে পারবে।

অল্প বয়স থেকে ব্যায়াম করলে বাচ্চাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। পরবর্তীকালেও বাচ্চারা নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখে।

নিষ্ক্রিয় জীবন যাপনের ফলে মানুষ নানান রোগে আক্রান্ত হয়। তাই ব্যায়ামের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাচ্চারা যদি প্রথম থেকেই ব্যায়ামে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, তা হলে তাদের মধ্যে রোগে ভোগার ঝুঁকি কমে যায়।

কী ভাবে বাচ্চাদের ব্যায়ামে অভ্যস্ত করবেন?

সমস্যা হলো বাচ্চারা সহজে ব্যায়াম করতে চায় না। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কী ভাবে তাদের ব্যায়ামে অভ্যস্ত করানো যায়। এখানে বাচ্চাদের ব্যায়াম করানোর কিছু টিপস দেওয়া রইল—

>এর জন্য প্রথম দিকে অভিভাবকদেরও বাচ্চাদের সঙ্গে ব্যায়াম করতে হবে। প্রথম এক মাস দিনে অন্তত আধ ঘণ্টা তাদের সঙ্গে যোগাসন বা মেডিটেশান করুন।

>অ্যারোবিক্স এক ধরণের ব্যায়াম। এর ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা দূর হয়। পাশাপাশি কোষে অক্সিজেন সঞ্চারে সাহায্য করে। বাড়িতেও অ্যারোবিক্স করা যেতে পারে এবং মা-বাবা এতে বাচ্চাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বাস্কেট বল খেলা, সাঁতার কাটা, দৌড়নো, সাইকেল চালানোর মতো ক্রিয়াকলাপ করতে পারেন। দৌড়ঝাপ ইত্যাদি যে কোনও বাচ্চাই আনন্দের সঙ্গে করে থাকে। তাই প্রথম প্রথম এমন কিছু ব্যায়াম দিয়ে শুরু করাই ভালো।

>সন্তান যদি নৃত্যশিল্পে রুচি রাখে, তা হলে দেরি না-করে কোনও প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দিন। কারণ শরীরের জন্য এর চেয়ে ভালো ব্যায়াম আর হয় না। ডান্সের ফলে পুরো শরীরের এক্সারসাইজ হয় এবং শরীর এনার্জি লাভ করে।

মনে রাখবেন

ব্যায়াম বা অ্যাক্টিভিটিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে শরীর ভালো ভাবে হাইড্রেট থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই তাদের সঙ্গে সব সময় জলের বোতল দেবেন। আবার বাচ্চারা রোদে খেলাধুলা করতে বের হলে, তাদের সানস্ক্রিন লাগিয়ে দিতে পারেন। পাশাাপাশি তাদের নিরাপত্তার উপকরণ ব্যবহারেও উৎসাহিত করতে পারেন, ফলে আঘাত লাগার সম্ভাবনা কমে। তবে নিজের সন্তানকে কোনও কাজের জন্য বাধ্য করবেন না। তাদের মনোভাব বুঝে সিদ্ধান্ত নিন।