March 28, 2024 | 9:07 PM

ওজন বেড়ে গেলেই চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে যে কীভাবে তা কমানো যায়। ওজন কমানোর জন্য অনেকে ব্যায়াম করার সময় পান না ঠিকমতো। ব্যায়াম ছাড়া খুব সহজেই মেদ ঝরিয়ে ফেলতে পারেন।

একটি নির্দিষ্ট ডায়েটে উল্লেখযোগ্য হারে কমবে মেদ। ওজন তো কমবেই, আর এই ওজন কমানোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে গিয়ে পেটের সমস্যাও হবে না। এনার্জি পাবেন, ঘুম হবে, ফিরে আসবে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য৷

এই নির্দিষ্ট ডায়েটে কী করবেন চলুন তা জেনে নেয়া যাক-

কী খাবেন, কী খাবেন না

এই ডায়েটে এমন খাবার বাদ দিতে হয়, যাদের কোনো ক্ষতিকর প্রভাব শরীরে সামান্য থাকলেও থাকতে পারে৷ যেমন দুধ ও দুধে বানানো খাবার অনেককেই ক্লান্ত করে, গমে–বার্লিতে থাকা গ্লুটেনে পেটের গোলমাল হয় কার, চিজ কারও মাইগ্রেনের ট্রিগার ফ্যাক্টর, সয়াবিন নাক দিয়ে জল পড়ার কারণ ইত্যাদি৷

প্রথম এক মাস এই সব খাবার বাদ দিয়ে তারপর একটা যোগ করে কিছুদিন দেখা হয়, কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না৷ হলে বাদ দিয়ে অন্য আর একটা ঢুকিয়ে কিছুদিন দেখা হয়৷ অসুবিধা না হলে তার পাশাপাশি আর একটা এসে ঢোকে৷ এভাবে ধীরে ধীরে ছোট হয় বাতিলের তালিকা৷

যেসব খাবার বাদ দিতে হবে

১। চিজ, দুধ, ইয়োগার্ট, দুধের সর ও ক্রিম

২। চাল, গম, ভুট্টা, কুইনোয়া, রাই, মিলেট, বাকহুইট, বুলগার বা কল বেরনো ছোলা–মুগ

৩। মদ তো নয়ই, যে সব খাবারে মদের ছিটেফোঁটা আছে, তাও চলবে না

৪। সব ধরনের বিনস, সয়াবিন, মটরশুঁটি, মুসুর ডাল, চিনেবাদাম

৫। চিনি, সুগার ফ্রি, ম্যাপ্ল সিরাপ, স্টেভিয়া

৬। প্রক্রিয়াজাত খাবার, বিশেষ করে যাতে এমএসজি, সালফাইটস ইত্যাদি

৭। বেকড খাবার, জাঙ্ক ফুড, এমনকি ফুলকপি দিয়ে পিৎজার ক্রাস্ট বা ডিম–কলা দিয়ে প্যানকেকও নয়৷

৮। আলু-সমেত সব রকম সবজি, যত ইচ্ছে

৯। ফল মাপ মতো, কারণ সুগার খুব বেশি বাড়ানো যাবে না

১০। প্রসেস না করা মাংস খাওয়া যায় মাঝেমধ্যে, তবে তাতে যেন চিনি বা সংরক্ষক না থাকে

১১। সব রকম সামুদ্রিক মাছ ও ডিম

১২। চিনাবাদাম ছাড়া অন্য সব রকম বাদাম ও বীজ

১৩। অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, ঘি

১৪। চিনি ছাড়া কালো চা বা কফি, আমন্ডের দুধ মেশাতে পারেন

১৫। ফল ও সব্জির রস, ডাবের জল, শশা–কমলা–লেবু বা বেরি ডোবানো জল৷

খিদে ও লোভ সামলানোর রাস্তা

পুষ্টিবিদদের মতে, তিন সপ্তাহের মধ্যে নতুন অভ্যাস অনেকটা তৈরি হয়ে যাবে, যদিও অভ্যাস পুরোপুরি বদলাতে ৬৬ দিনের মতো লাগে, তবু তিন সপ্তাহে শরীর–মন–এনার্জি ও ওজনের ওপর ভাল প্রভাব পড়ে, অব্যর্থভাবে ওজন কমতে শুরু করে যে বাকি ক’টা দিন এই ডায়েট টানা যায়৷

ওজন যে কমছে তা শরীরই জানিয়ে দেবে৷ তবে অপ্রস্তুত অবস্থায় হুট করে শুরু করবেন না৷ প্রস্তুতি নিয়ে তবে কাজে নামুন৷ এক-দু’মাস পর থেকে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে বাতিলের তালিকা ছোট করুন। বাতিলের তালিকা বড় করার সময় থেকে শুরু করুন ব্যায়াম। ফলে খাবার যোগ হলেও ওজন বাড়বে না।

ডায়েটের প্রস্তুতি

১। ঘরে কোনো ভুলভাল খাবার রাখবেন না৷

২। কবে কী খাবেন, তার পরিকল্পনা করে রাখুন৷ অন্তত দিন তিনেকের।

৩। কোনো দিন রান্না করতে ভাল না লাগলে কী খাবেন, তাও ঠিক করে রাখুন৷

৪। খাবার একটু বেশি করে বানান, যাতে রোজ রোজ ঝামেলা করতে না হয়৷

৫। পানীয় হিসাবে চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি নিন৷

৬। প্যাকেটের খাবার কেনার আগে তাতে কী মেশানো আছে ভাল করে পড়ে নিন৷

৭। ধীরে ধীরে খান৷ মন দিয়ে৷ এতে খাবারের স্বাদ যেমন পাবেন, কম খাবারে পেট ভরে যাবে৷